রবিতে সূচনা কল্যাণী এমসের। — ফাইল চিত্র।
দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান হতে চলেছে আগামী রবিবার। বাংলার প্রথম এমস হাসপাতালের উদ্বোধন করতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ২০১৯ সাল থেকেই এই হাসপাতালের কিছু বিভাগ চালু থাকলেও এ বার পুরোপুরি চালু হতে চলেছে বলে জানা গিয়েছে। দিল্লি থেকেই ভার্চুয়াল মাধ্যমে কল্যাণী এমসের উদ্বোধন করবেন মোদী। প্রসঙ্গত, রবিবার কল্যাণী ছাড়াও রাজকোট, মঙ্গলাগিরি, ভাটিন্ডা, রায়বরেলী এবং জম্মুর এমসেরও সূচনা করবেন মোদী।
বাংলার প্রথম এমস হওয়ার কথা ছিল রানিগঞ্জে। সেটা বাম জমানায়। সেই সময়ে কেন্দ্রীয় সরকার অনুমোদনও দিয়েছিল। কিন্তু কাজ শুরু হয়নি। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কল্যাণীতে গড়ার কথা বলেন। কলকাতা থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে ১৮০ একর জমিতে হাসপাতাল তৈরির কাজ শুরু হয় ২০১৫ সালে মোদী সরকার অনুমোদন দেওয়ায়। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে মেডিক্যাল কলেজ চালু হয়। এ বার পূর্ণ রূপে হাসপাতাল চালু হতে চলেছে।
তবে মেডিক্যাল কলেজ চালু হওয়ার পর থেকেই বিতর্ক তৈরি হয় নিয়োগকে কেন্দ্র করে। একাধিক বিজেপি নেতার নাম উঠে আসে নিয়োগে প্রভাব খাটানোর অভিযোগে। গত নভেম্বরেই ভবানী ভবনে সিআইডি জিজ্ঞাসাবাদ করে কল্যাণী এমসের ভারপ্রাপ্ত অধিকর্তা রামজি সিংহকে। কল্যাণী এমসে বরাত পাওয়া ঠিকাদার সংস্থায় চাকরি নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ২০২২ সালের মে মাসে কল্যাণী থানায় লিখিত অভিযোগ করেছিলেন মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়ার এক যুবক।
এর পরে প্রতারণা, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র-সহ একাধিক ধারায় তখন মামলা রুজু হয়। তাতে অনেকের নাম জড়িয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার, বাঁকুড়ার সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার, চাকদহের বিজেপি বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষ, বাঁকুড়ার বিধায়ক নীলাদ্রিশেখর দানা, তাঁর কন্যা মৈত্রী দানা, বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য দীপা বিশ্বাস। বঙ্কিম ঘোষের পুত্রবধূ অনুসূয়া ঘোষ এবং নীলাদ্রিশেখর দানার মেয়ে মৈত্রী দানা এমসে ঠিকাদার সংস্থার মাধ্যমে কাজ পেয়েছিলেন। অভিযোগ ছিল, দুই বিধায়ক নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে তাঁদের কাজ পাইয়ে দিয়েছেন। ওই মামলার তদন্তভার সিআইডি নেয়। এফআইআর-ও দায়ের হয়েছে চার বিজেপি বিধায়ক-সহ আট জনের বিরুদ্ধে।
আপাতত সেই সব বিতর্ক ভুলে উদ্বোধন হতে চলেছে এমসের। লোকসভা নির্বাচনের আগে যা বিজেপিকে সুবিধা করে দেবে বলেই মনে করছে পদ্ম-শিবির। এই বিষয়ে রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকারকে ফোন করা হলেও কথা বলা যায়নি। তবে রাজ্য বিজেপি ইতিমধ্যেই মোদীর ভার্চুয়াল উদ্বোধনের জন্য প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে।