প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। — ফাইল চিত্র।
মার্চের প্রথম সপ্তাহে রাজ্যে আসতে পারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাজ্য বিজেপি চাইছে, মোদী ৬ মার্চ বাংলায় এসে বারাসতে সভা করুন এবং সেই সভায় সন্দেশখালিতে মহিলা ‘নিগ্রহ’ নিয়ে ভাষণ দিন।
গত বুধবার থেকে আবার উত্তপ্ত হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালি। গ্রামবাসীদের একাংশ তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখকে গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। সামনের সারিতে ছিলেন মহিলারা। তাঁদের অভিযোগ ছিল, দিনের পর দিন হেনস্থা করা হয়েছে তাঁদের। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূল নেতৃত্বের হাতে ‘নির্যাতিত’ হয়েছেন মহিলারা। এ নিয়ে রাজ্য বিজেপির তরফে একটি ব্যঙ্গচিত্র সমাজমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে। তা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তার মধ্যেই রাজ্য বিজেপি চাইছে, ৬ মার্চ উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সদর বারাসতে সভা করুন মোদী। তাঁর ভাষণের বিষয় হোক সন্দেশখালিতে মহিলাদের ‘নিগ্রহ’।
২৯ ফেব্রুয়ারি রাজ্যে আসার কথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের। সব কিছু ঠিকঠাক চললে ওই দিন নদিয়ার মায়াপুরে ইস্কনের মন্দিরে যেতে পারেন তিনি। সেখানে মন্দির দর্শনের পরে রানাঘাট-সহ আশপাশের কয়েকটি লোকসভার নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে বসতে পারেন শাহ। সেই সময়ে রাজ্যে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা চলায় কোনও প্রকাশ্য সমাবেশ হবে না। গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসের শেষেও মায়াপুরের এই মন্দিরে এসেছিলেন তিনি।
সব ঠিক থাকলে শাহের সফরের দিন কয়েক পরেই রাজ্যে আসতে পারেন প্রধানমন্ত্রী। ভাষণ দিতে পারেন সন্দেশখালি নিয়ে। শুক্রবারই সন্দেশখালি যাওয়ার চেষ্টা করেছিল বিজেপির প্রতিনিধিদল। তাদের রামপুরে আটকে দেওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁরা রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেন। আগামী সপ্তাহে সন্দেশখালি যাওয়ার কথা জাতীয় মহিলা কমিশনের একটি প্রতিনিধি দলের। নেতৃত্বে থাকবেন চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা। সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার এবং রাজ্যের মুখ্যসচিব বিপি গোপালিকের সঙ্গেও কথা বলতে চায় তারা।
সন্দেশখালির মহিলাদের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে গত সোমবার সন্দেশখালি গিয়েছিল রাজ্যের মহিলা কমিশন। স্থানীয় মহিলাদের সঙ্গে কথা বলে রাজ্যের কমিশনের প্রতিনিধিরা জানিয়েছিলেন, এমন কোনও মহিলাকে পাওয়া যায়নি যিনি প্রকাশ্যে শ্লীলতাহানি বা ধর্ষণের অভিযোগ তুলেছেন। এর পরেই সন্দেশখালিতে ওঠা নির্যাতনের অভিযোগের তদন্ত করতে রাজ্য পুলিশের তরফে ১০ সদস্যের একটি দল গঠন করা হয়। মঙ্গলবার দিনভর গ্রামে গ্রামে ঘুরে প্রাথমিক ভাবে ‘ধর্ষিতা’ কারও দেখা পাননি পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দলের সদস্যেরা। এর পরে মঙ্গলবার দুপুরে সন্দেশখালি যান জাতীয় মহিলা কমিশনের দু’জন প্রতিনিধি। সন্দেশখালির হালদারপাড়া, পুকুরপাড়া ও লস্করপাড়ার মহিলাদের সঙ্গে তাঁরা কথা বলেন। বিজেপি এখন চাইছে, এই সন্দেশখালিতে মহিলা নির্যাতন নিয়ে ভাষণ দিন মোদী।