Dengue

ডেঙ্গির ক্ষতিপূরণ চেয়ে হাইকোর্টে মামলা

মশা মোকাবিলা ও ডেঙ্গি আক্রান্তদের চিকিৎসা নিয়ে ওঠা নানা অভিযোগ নিয়ে আজ, বৃহস্পতিবার পুরভবনে বৈঠকে বসছেন কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৭ ০৪:০৮
Share:

ফাইল চিত্র।

ডেঙ্গিতে মৃত্যুর ঘটনা জেলায়। কলকাতাতেও। আক্রান্তদের চিকিৎসায় নানা গাফিলতির খবর আসছে। মঙ্গলবার মুম্বই যাওয়ার আগে মশাবাহী রোগ প্রতিরোধে আরও সতর্ক হওয়ার জন্য দলের কাউন্সিলরদের নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরে নড়ে বসেছে কলকাতা পুরসভাও। মশা মোকাবিলা ও ডেঙ্গি আক্রান্তদের চিকিৎসা নিয়ে ওঠা নানা অভিযোগ নিয়ে আজ, বৃহস্পতিবার পুরভবনে বৈঠকে বসছেন কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়।

Advertisement

এর মধ্যেই ডেঙ্গি নিয়ে জনস্বার্থ মামলা করার আর্জি বুধবার মঞ্জুর করেছে হাইকোর্ট। আবেদনকারী জানিয়েছেন— ডেঙ্গি নিয়ে তাদের অবস্থান কী, রাজ্য সরকারের কাছে যেমন তার হলফনামা চাওয়া হবে, তেমনই আক্রান্ত ও মৃতদের ক্ষতিপূরণের দাবিও থাকবে তাঁর মামলায়। বৃহস্পতিবারই জনস্বার্থ মামলাটি করা হচ্ছে।

সপ্তাহ দুয়েক আগে ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়েছিল উল্টোডাঙার এক কিশোরীর। বুধবার ভোরে এই এলাকার এক শিশুও মারা গিয়েছে। ঘাতক একই— ডেঙ্গি। শুক্রবার থেকে জ্বরে পড়ে ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের হরিশ নিয়োগী রোডের বাসিন্দা তির্যক চক্রবর্তী (৬)। সোমবার রক্ত পরীক্ষায় তার ডেঙ্গি নিশ্চিত হয়। এর পরে সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে বাইপাসের ধারে একটি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বুধবার সেখানে তার মৃত্যু হওয়ার পরে সার্টিফিকেটে ডেঙ্গিকেই চিহ্নিত করা হয়েছে।

Advertisement

মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার পর্যন্ত ডেঙ্গি আর ‘অজানা জ্বরে’ সাত জনের মৃত্যু হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনায়। এঁদের দু’জনই দেগঙ্গার। কামারহাটির সাগর দত্ত মেডিক্যাল হাসপাতালে মঙ্গলবার রাতে মারা গিয়েছেন দেগঙ্গার বেড়াচাঁপা-২ পঞ্চায়েতের যাদবপুর পূর্বপাড়ার সায়েরা বিবি (৪৫)। তিনি ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে ডেথ সার্টিফিকেটে লেখা হয়েছে। প্রায় একই সময়ে কলকাতায় আর জি কর হাসপাতালে মারা গিয়েছেন দেগঙ্গার চাকলা পঞ্চায়েতের কাহারপাড়ার কল্পনা কাহার (৫৫)।

আরও পড়ুন: খাদ্য উৎসবে ‘জাতীয় খাবার’-এর মর্যাদা পেতে চলেছে খিচুড়ি!

বারাসতের নবপল্লির ইন্দ্রজিৎ মোদক (৪০) জ্বর সারিয়ে দক্ষিণ কলকাতার একটি হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছিলেন। ফের অসুস্থ হয়ে পড়ায় সেখানেই আবার তাঁকে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার রাতে তিনি মারা গিয়েছেন। হাবরার সোদপুরের অজিত দত্ত (৬৭) বুধবার সকালে বারাসতের একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা গিয়েছেন। তাঁর রক্তেও ডেঙ্গি মিলেছিল বলে হাসপাতালের রিপোর্টে জানানো হয়েছে। বনগাঁ হাসপাতাল থেকে কলকাতার পথে মারা গিয়েছেন জ্বরে আক্রান্ত পূর্বপাড়ার পূর্ণিমা হালদার (৩৯)। তাঁর ছেলেও জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি। সেখান থেকেই মায়ের শেষকৃত্যের জন্য তাকে শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়। মারা গিয়েছেন কাঁচরাপাড়ার কালীনগর এলাকার গণেশ রজক (২৬) ও গাইঘাটার বিনয় মজুমদার (৩০)-ও।

ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে জনস্বার্থ মামলা করার জন্য আইনজীবী রবিশঙ্কর চট্টোপাধ্যায়ের আবেদন বুধবার মঞ্জুর করেছে হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার মামলাটি করছেন তিনি। তাতে ডেঙ্গিতে মৃতদের জন্য ১০ লক্ষ এবং আক্রান্তদের জন্য ৩ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণের দাবি জানানো হবে বলে ওই আইনজীবী জানিয়েছেন। রবিশঙ্করবাবু বলেন, রাজ্য প্রশাসনের বক্তব্য— ডেঙ্গি নিয়ে রাজ্য ও সংবাদ মাধ্যম দু’রকম কথা বলছে। বিভিন্ন প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরি জ্বরে আক্রান্তদের রক্ত পরীক্ষা করে ডেঙ্গি পাচ্ছে। কিন্তু প্রশাসনের চাপে তারা রিপোর্টে ‘ডেঙ্গি’ লিখতে পারছে না। ফলে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি বাড়ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement