মুর্শিদাবাদের কান্দি পুরসভার সামনে তৃণমূলের মিছিলে আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে দাপাদাপির ঘটনায় কলকাতা হাইকোর্টে বৃহস্পতিবার মামলা করল কংগ্রেস।
মুখ্য বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর ও জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চে জনস্বার্থ মামলাটি দাখিল হয়েছে। মামলার আবেদনে বলা হয়েছে, গত সোমবার পুলিশের সামনেই ওই ঘটনা ঘটলেও যারা বেআইনি অস্ত্র নিয়ে সন্ত্রাসের বাতাবরণ তৈরি করল, পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করেনি। অভিযুক্তেরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাদের ধরার চেষ্টা করছে না। ঘটনায় রাজ্যবাসী ভীত এবং সন্ত্রস্ত।
আবেদনকারীদের এক জন কলকাতার গড়িয়ার বিশ্বজিৎ ভৌমিক, অন্য জন কান্দিরই সৌম্য গোস্বামী। সৌম্যবাবু ছাত্র পরিষদের কান্দি শহর সভাপতি। তাঁদের পক্ষের আইনজীবী অরিন্দম দাস জানান, মামলায় যুক্ত করা হয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে। বলা হয়েছে, আগামী ৩ অক্টোবর রাজ্যের তিনটি পুরসভায় নির্বাচন হবে। কান্দির ঘটনার প্রভাব পড়তে পারে ওই তিন পুর-ভোটেও। সে কারণে অবাধ এবং স্বচ্ছ নির্বাচন পরিচালনায় রাজ্য নির্বাচন কমিশনের উপযুক্ত পদক্ষেপ দাবি করা হয়েছে। মামলায় জড়ানো হয়েছে রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতর ও মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপারকে। পুলিশ সুপার সি সুধাকর অবশ্য বলেন, ‘‘আদালতের কাগজ হাতে না পাওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে মন্তব্য করব না।’’
তৃণমূলের মিছিলে পিস্তল-কাণ্ডে কান্দির বিধায়ক তথা পুরপ্রধান অপূর্ব সরকার মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু ঘটনার মূল অভিযুক্ত সব্যসাচী দাস, পার্থসারথি দাস, মাধব দাস ও দুঃশাসন ঘোষ বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত গ্রেফতার হয়নি। কংগ্রেসের অভিযোগ, সোমবারই ওই চার জনের পরিচয় স্পষ্ট হয় ভিডিও-ফুটেজ থেকে। পুলিশ চাইলে সে দিনই তাদের ধরতে পারত। পুলিশের ‘গাফিলতি’র সুযোগেই মঙ্গলবার থেকে ওই চার জন পলাতক।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর দাবি, ওই চার জন ঝাড়খণ্ডের দেওঘরে এক তৃণমূল নেতার আশ্রয়ে লুকিয়ে রয়েছে বলে তিনি খবর পেয়েছেন। পুলিশ তা জেনেও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তাঁর কথায়, ‘‘বিচারব্যবস্থার উপরে আমরা ভরসা করি। তাই সুবিচার পেতে আদালতের শরণাপন্ন হয়েছি।’’ পক্ষান্তরে, জেলা তৃণমূল সভাপতি মান্নান হোসেনের মন্তব্য, ‘‘অভিযুক্তেরা কংগ্রেসেরই লোক। তাই অধীরবাবুই ভাল বলতে পারবেন, তারা কোথায় রয়েছে।’’