ছবি সংগৃহীত
কোভিড চিকিৎসা সংক্রান্ত রাজ্যের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের মধ্যে কী ধরনের প্রশ্ন রয়েছে রবিবার তার আভাস পেল স্বাস্থ্য ভবন।
করোনা রোগীর চিকিৎসায় স্বাস্থ্য দফতর ইতিমধ্যে প্রোটোকল জারি করেছে। কিন্তু সেই প্রোটোকলের বাইরে প্রতিদিন করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা করতে গিয়ে রাজ্য জুড়ে চিকিৎসকেরা কী ধরনের অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হচ্ছে তা জানতে এখন থেকে প্রতি রবিবার রাতে ওয়েব-মঞ্চে সকলে মিলিত হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ দিনের সভায় স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী, স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্যের পাশাপাশি বক্তা তালিকায় ছিলেন বেসরকারি স্বাস্থ্যক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত চেস্ট মেডিসিনের চিকিৎসক রাজা ধর এবং ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটের চিকিৎসক সুশ্রুত বন্দ্যোপাধ্যায়।
স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে খবর, প্রথম দিন সারা রাজ্যের অন্তত ৫০০ চিকিৎসক এ দিনের ওয়েবিনারে যোগ দিয়েছিলেন। চিকিৎসকদের আলোচনায় টোসিলিজুমাব ব্যবহারের পরে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হচ্ছে বলে জানানো হয়। এ বিষয়ে চিকিৎসকদের সতর্ক করা হয়। সেই সূত্রে স্বাস্থ্য দফতরের প্রোটোকলে রেমডিসিভির ব্যবহারের অনুমতি কেন নেই, তা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের কাছে জানতে চান চিকিৎসকদের একাংশ। বস্তুত, রাজ্যের কোভিড চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রোটোকলে বেশ কিছু পরিমার্জনের সুযোগ রয়েছে কি না তা এ দিনের ওয়েবিনারে যোগ দেওয়া চিকিৎসকেরা জানতে আগ্রহী ছিলেন বলে খবর। তাঁদের বক্তব্য, করোনা রোগী ডায়াগনসিস করার প্রশ্নে আরটি-পিসিআর কষ্টিপাথর ঠিকই। কিন্তু নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট আসতে যেহেতু দেরি হচ্ছে, তাই সিটি স্ক্যান এবং এক্স-রে রিপোর্ট দেখে ডায়াগনসিসের সুযোগ রয়েছে কি না, তা চিকিৎসকেরা জানতে চান। সরকারি ভাবে বাড়ি থেকে নমুনা সংগ্রহ সংক্রান্ত কোনও নির্দেশিকা নেই। সেই বিষয়টিও স্বাস্থ্য ভবনের নজরে আনা হয়।
হাই-ফ্লো অক্সিজেন ক্যানুলার ব্যবহারে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রোগীদের ভেন্টিলেশনে দেওয়ার প্রয়োজন হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ওয়েবিনারে যোগ দেওয়া চিকিৎসকদের একাংশ। স্টেরয়েডের ব্যবহারে কী ধরনে উপকার পাওয়া যাচ্ছে তা-ও আলোচনা করা হয়।
এ দিনের ভার্চুয়াল সভা সূত্রে খবর, চিকিৎসক রাজা ধর জানিয়েছেন, বেশ কিছু রোগীর ক্ষেত্রে তাঁর অভিজ্ঞতা হল, রোগীর কোভিডের উপসর্গ রয়েছে। কিন্তু নাকের থেকে নমুনা সংগ্রহ করার পরে পরীক্ষার রিপোর্ট দেখা যায় নেগেটিভ। বার তিনেক এ রকম হওয়ার পরে ব্রঙ্কোস্কোপি থেকে সংগৃহীত নমুনা আরটি-পিসিআরের জন্য পাঠানো হলে করোনা
পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। বস্তুত, আরটি-পিসিআরে নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এলেও চিকিৎসক যদি মনে করেন রোগী আদতে কোভিড পজ়িটিভ, সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট রোগীকে আইসোলেশন ব্লকে রেখে পুনরায় আরটি-পিসিআর পরীক্ষার জন্য নমুনা পাঠানোর পরামর্শ দেওয়া হয় এদিনের সভায়।
আরও পড়ুন: ১১৪৬ কিমি ঘুরেও ‘মিলল না’ জরুরি চিকিৎসা!
আরজিকরের মেডিসিনের প্রফেসর জ্যোতির্ময় পাল জানান, এ দিনের আলোচনা শেষে ঠিক হয়েছে কোভিডের চিকিৎসা সংক্রান্ত কোনও জিজ্ঞাসা বা জটিল রোগীর চিকিৎসা নিয়ে কোনও প্রশ্ন থাকলে ই-মেলের মাধ্যমে চিকিৎসকেরা স্বাস্থ্য ভবনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সেই সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।