(বাঁ দিকে) কুম্ভমেলায় স্নানের অপেক্ষায় ঘাটে পুণ্যার্থীরা। কলকাতা বইমেলায় পাঠকের স্রোত (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
বইমেলাকে ‘বাঙালি ঘরানার কুম্ভমেলা’ (কুম্ভমেলা, বেঙ্গলি স্টাইল) বলে আখ্যা দিলেন এ দেশে জার্মানির রাষ্ট্রদূত ফিলিপ আকারমান। মঙ্গলবার সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্কে বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসে তিনি বললেন, ‘‘কলকাতা বইমেলায় ভারত ও বিশ্বের দেখা হয়।’’ বইমেলার উদ্যোক্তা পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ডের সভাপতি ত্রিদিবকুমার চট্টোপাধ্যায় বলছিলেন, ফ্রাঙ্কফুর্টের বইমেলা থেকে প্রেরণা নিয়েই ১৯৭৬ সালে কলকাতা বইমেলা তার পথ চলা শুরু করে। ১৯৮৩ সালে বইমেলা জেনিভার ইন্টারন্যাশনাল পাবলিশার্স অ্যাসোসিয়েশনের আন্তর্জাতিক মর্যাদা পায়। বইমেলার ৪৮ বছরে প্রথম বার জার্মানি থিম দেশ হওয়া প্রসঙ্গে জার্মান রাষ্ট্রদূত বললেন, ‘‘এত বছর বাদে জার্মানি কলকাতা বইমেলা মানে ভারতের সাংস্কৃতিক ও শিল্পী হৃদয়ের কাছে এল। ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় ভারত অবশ্য আগে দু’বার ‘গেস্ট অব অনার’-এর মর্যাদা পেয়েছে।’’
জার্মানির কলকাতা বইমেলায় পূর্ণ মহিমায় আসায় দেরি হলেও তা ‘দুরস্ত আসা’ হয়েছে বলেই ব্যাখ্যা করেছেন রাষ্ট্রদূত আকারমান এবং গ্যেটে ইনস্টিটিউটের দক্ষিণ এশিয়ার ডিরেক্টর মার্লা স্টুকারবার্গ। মার্লা বলেন, ‘‘জার্মান ভাষার ৭০ জন লেখক, অনুবাদক বইমেলাকে জীবন্ত করে তুলবেন। আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন স্থপতি অনুপমা কুণ্ডু ও তাঁর সহযোগীরা জার্মান প্যাভিলিয়নে বৈচিত্র ও পরিবেশ সচেতনতার বার্তা মেলে ধরেছেন।’’ ৪৮ বার হাতুড়ি পিটিয়ে ৪৮তম বইমেলা উদ্বোধনের আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বট বৃক্ষের মতো বই বৃক্ষও মহীরূহ। মানবিক সম্পর্কের মতো বইকে ভালবাসুন। বই হল হৃদয়ের ডেকরেশন।’’ বইমেলার উদ্বোধনী মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রীর তিনটি বই লিপিবদ্ধ কিছু কাজ, বাংলার নির্বাচন ও আমরা, স্যালুট টু প্রকাশিত হয়। প্রাক্তন মুখ্যসচিব তথা রাজ্যের প্রধান আর্থিক উপদেষ্টা হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর লেখা ‘ডেট সাসটেনিবিলিটি অব সাব-ন্যাশনাল গভর্নমেন্টস ইন ইন্ডিয়া: লেসনস ফ্রম ইন্টারন্যাশনাল ডেট ক্রাইসিস’ বইটিও ওই মঞ্চে প্রকাশিত হয়। সাহিত্যিক আবুল বাশারকে এই মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রীর তরফে ‘জীবনকৃতী সম্মান’ দেওয়া হয়েছে। বইমেলা চলবে আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।