প্রতীকী ছবি।
শহরের কিছু মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল ছাড়া ভারত জুড়ে বহির্বিভাগে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেনি (পিজিটি) চিকিৎসকদের কর্মবিরতির কোনও প্রভাব দেখা গেল না বাংলায়। তবে সব থেকে সমস্যা হয়েছে রাজ্যের সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এসএসকেএম হাসপাতালে। দূরদূরান্ত থেকে মানুষ ওই হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা করাতে আসেন। সোমবার পিজিটি-দের কর্মবিরতির জেরে বহির্বিভাগে চিকিৎসা করাতে আসা লোকজনের ভোগান্তি চরমে ওঠে। ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ, এনআরএস-সহ শহরের অন্যান্য মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও বহির্বিভাগের রোগীদের চিকিৎসার জন্য দীর্ঘ ক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়।
পিজিটি-র প্রথম বর্ষে ভর্তির কাউন্সেলিংয়ের উপরে স্থগিতাদেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সংশ্লিষ্ট জনস্বার্থ মামলার শুনানি হবে জানুয়ারিতে। ফলে সেপ্টেম্বরে পিজি নিটের ফল প্রকাশিত হলেও এখনও কাউন্সেলিং শুরু না-হওয়ায় প্রথম বর্ষে কবে পড়ুয়া আসবেন, তা অনিশ্চিত। সেই ঘটনাকে ঘিরে হাসপাতালের বহির্বিভাগে কর্মবিরতি শুরু হয়েছে সারা দেশে। তবে এ দিন জেলার ছবি ছিল অন্য রকম। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কোনও আন্দোলনের কর্মসূচিই দেখা যায়নি। দুই জায়গাতেই কাজ করেছেন পিজিটি-রা। মেদিনীপুর মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পঞ্চানন কুণ্ডু বলেন, ‘‘এখানে বহির্বিভাগ ও অন্তর্বিভাগ সবই স্বাভাবিক ছিল।’’
কর্মবিরতির প্রভাব পড়েনি মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজেও। বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেনি চিকিৎসকদের কোনও কর্মবিরতি তাঁদের হাসপাতালে পালিত হয়নি। পুরুলিয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, নতুন এই মেডিক্যাল কলেজে এখনও কোনও পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেনি চিকিৎসকই আসেননি। তাই কর্মবিরতির প্রশ্ন নেই। প্রভাব পড়েনি বীরভূমের রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও। সেখানেকার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট চিকিৎসকেরা এ দিন যথারীতি ক্লাস নিয়েছেন। হাসপাতালেও পরিষেবা দিয়েছেন। অনেক চিকিৎসক বিষয়টি জানেন না বলেও দাবি করেছেন।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল এবং মালদহ মেডিক্যালেও একই অবস্থা। তবে একাংশের বক্তব্য, সমন্বয়ের অভাবেই হয়তো কোনও কর্মসূচি নেওয়া হয়নি। তবে তাঁরাও চান, দ্রুত কাউন্সেলিং সেরে প্রথম বর্ষে পিজিটি পড়ুয়াদের ভর্তি নেওয়া হোক। কোভিড আবহে পরীক্ষা পিছিয়ে সেপ্টেম্বরে হলেও কাউন্সেলিং না -হওয়ায় পিজি প্রথম বর্ষে এখনও ভর্তি হয়নি। তাতে চিকিৎসকের সঙ্কট তৈরি হতে পারে।
কর্মবিরতি পালিত হয়নি উত্তর ২৪ পরগনার হাসপাতালগুলিতেও। বারাসত জেলা হাসপাতালের সুপার সুব্রত মণ্ডল বলেন, ‘‘আমাদের হাসপাতালে ১১ জন পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেনি চিকিৎসক আছেন। তাঁরাও এ দিন পরিষেবা দিয়েছেন।’’ অবিলম্বে কাউন্সেলিং শুরু করা, দ্রুত শুনানির জন্য আবেদন জানিয়েছে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের জুনিয়র ডক্টর্স নেটওয়ার্কও।