মোদীকে চিঠি লিখলেন মমতা।
পেট্রোপণ্যের দাম বৃদ্ধি নিয়ে রাজ্য জুড়ে প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দেওয়া দিয়েছে তৃণমূল। এরই সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পেট্রল ও ডিজেলের দাম কমাতে দ্রুত পদক্ষেপ করার আর্জি জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন রাজ্যে খুচরো বাজারে পেট্রলের দাম লিটারে ১০০ টাকা ছাড়িয়েছে। এই ‘নজিরবিহীন’ মূল্যবৃদ্ধির জেরে নাভিশ্বাস হয়ে উঠেছেন সাধারণ মানুষ।
মমতা লেখেন, ‘গত ৪ মে থেকে পেট্রল, ডিজেলের দাম আট বার বেড়েছে। তার মধ্যে গত জুন মাসেই বেড়েছে ছ’বার। তার মধ্যে এক সপ্তাহে বেড়েছে চার বার। এই মূল্যবৃদ্ধির জেরে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ তো বাড়ছেই, পাশাপাশি দেশে মুদ্রাস্ফীতির হারকে সরাসরি প্রভাবিত করছে।’ শুধু তাই নয়, কেন্দ্রের বিরুদ্ধে মমতার অভিযোগ, পেট্রল ও ডিজেলের দামের উপর কর এবং সেস বসিয়ে কেন্দ্রের যা আয় হয়, তাতে সেসের ভাগ বেশি হওয়ায় রাজ্য প্রাপ্য অর্থ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এই বিষয়টিকে ‘যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর বিরোধী’ বলে ব্যাখ্যা করেন মমতা। প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাঁর আর্জি, ‘পেট্রল ও ডিজেলের উপর কেন্দ্রীয় কর অনেকটা কমিয়ে দাম নিয়ন্ত্রণ করা হোক, যাতে সাধারণ মানুষ খানিক স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারেন। এতে দেশে ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতিও নিয়ন্ত্রণে আসবে।’
পেট্রোপণ্য ছাড়াও পাইকারি বাজারে জরুরি জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির বিষয়টিও চিঠিতে উল্লেখ করেন মমতা। লেখেন, ‘পেট্রল, ডিজেলের দাম বৃদ্ধির কারণেই নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম বাড়ছে। এই অতিমারি সঙ্কটের মধ্যে ভোজ্য তেলের দাম ৩০.৮ শতাংশ, ডিম ১৫.২ শতাংশ, ফল ১২ শতাংশ এবং স্বাস্থ্যপণ্যের দাম ৮.৪৪ শতাংশ বেড়েছে।’
চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন, ‘কোভিড পরিস্থিতিতে ২০২০-২১ অর্থবর্ষে তেল এবং পেট্রোপণ্য থেকে সরকারের আয় হয়েছে ৩ লক্ষ ৭১ হাজার ৭২৫ কোটি টাকা। শুধু তাই নয়, ২০১৪-১৫ অর্থবর্ষ থেকে তেল এবং পেট্রোপণ্যের দাম বেড়েছে ৩৭০ শতাংশ। মূলত সেস, সারচার্জ-সহ কেন্দ্রীয় শুল্ক বাড়ার ফলেই এত বেশি হারে দাম বাড়ছে।’ জনসাধারণের কথা মাথায় রেখে পেট্রল ও ডিজেলের দামের উপর কর কিছুটা কমিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার, মোদীকে এ-ও জানিয়েছেন মমতা।