বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়। ফাইল চিত্র।
সোশ্যাল মিডিয়ায় রাজনীতি ছাড়ার ‘ঘোষণা’ করেছেন আসানসোলের বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়। সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথাও লিখেছিলেন। তাতেই এলাকার নানা প্রকল্প নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে তাঁর দত্তক নেওয়া গ্রাম, পশ্চিম বর্ধমানের সালানপুরের সিদাবাড়িতে। তৃণমূলের অবশ্য আশ্বাস, গ্রামবাসী বঞ্চিত হবেন না।
২০১৪-য় প্রথম বার সাংসদ ও মন্ত্রী হয়ে ওই গ্রামটি দত্তক নেন বাবুল। নর্দমা, রাস্তা, পানীয় জলের ব্যবস্থা হয়। গ্রামে প্রায় চারশো পরিবারের বাস। বাবুলের কাছে কর্মসংস্থানের আর্জি জানান এলাকাবাসী। বরাকর নদে ‘খাঁচা’ বসিয়ে মাছ চাষ, পতিত জমিতে ফল চাষ, মহিলাদের জন্য পাটের সামগ্রী তৈরির প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের আশ্বাস দেন বাবুল। ২০১৫-য় মাছ চাষ শুরু হয়। তৈরি হয় প্রশিক্ষণ কেন্দ্রও।
গ্রামে মাছ চাষের সমবায় সমিতির কর্ণধার তীর্থ সেন রবিবার দাবি করেন, ‘‘সাংসদের সহযোগিতায় আমরা অর্থের মুখ দেখেছি। কয়েক বছর আগে ঝড়ে মাছের খাঁচা ভেঙে গেলে, সারাইয়ে উদ্যোগী হন বাবুল। তিনি সাংসদ না থাকলে ফের হয়তো শূন্য থেকে শুরু করতে হবে!’’ গ্রামের যুবক অসিত রুজের আশঙ্কা, ‘‘আনাজ ও ফল চাষের তোড়জোড় হয়তো বন্ধ হয়ে যাবে।’’ পাটের সামগ্রী তৈরির প্রশিক্ষণ নেওয়া মেনকা টুডুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘জানি না, এ সব আর চলবে কি না।’’
জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ (কুটির শিল্প) তথা স্থানীয় তৃণমূল নেতা মহম্মদ আরমানের অবশ্য দাবি, ‘‘সাংসদ গ্রামটি দত্তক নিলেও, বিভিন্ন প্রকল্প রূপায়ণে পাশে থেকেছে স্থানীয় প্রশাসন। তাই প্রকল্প থেকে বঞ্চিত হবেন না এলাকাবাসী।’’ বিজেপির জেলা আহ্বায়ক শিবরাম বর্মণের আবার প্রতিক্রিয়া, ‘‘দলীয় স্তরে সাংসদের পদক্ষেপের বিষয়ে এখনও কিছু জানি না। তবে সাংসদদের দত্তক নেওয়া গ্রামে কেন্দ্রের উন্নয়ন চলছে।’’
বিভিন্ন প্রকল্পের অগ্রগতি দেখতে সিদাবাড়িতে কয়েক বার এসেছেন বাবুল। এলাকাবাসীর আবদারে শুনিয়েছেন গানও। শনিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় রাজনীতি ছাড়ার ‘পোস্টে’ তিনি লিখেছেন ‘চললাম, অলবিদা’। গ্রামের অশীতিপর বাসিন্দা প্রেম মণ্ডলের প্রতিক্রিয়া, ‘‘বাবুল রাজনৈতিক পদক্ষেপ কী করবেন, তা তাঁর বিষয়। তবে আমরা তাঁকে বলতে চাই, কভি অলবিদা না কহনা!’’ বাবুল এ দিন কোনও মন্তব্য করতে চাননি।