ছুটির দিনে কিঞ্চিৎ স্বস্তিতে ট্রেন ধরে কাজ সারা যাবে ভেবে রবিবার ঘর থেকে বেরিয়েছিলেন শতদ্রু সান্যাল। কিন্তু প্রথমে ট্রেন বাতিল এবং তার প্রতিবাদে অবরোধ তাঁর স্বস্তির সফরে কাঁটা ছড়িয়ে দিল। শ্যামনগর স্টেশনে অবরোধ এবং তার জেরে দীর্ঘ ক্ষণ ট্রেন-বিভ্রাটে স্টেশনে স্টেশনে নাকাল হলেন হাজার হাজার শতদ্রু।
সময়ে ট্রেন চালানোর বালাই নেই। তার উপরে লেগেই আছে ট্রেন বাতিল। রবিবার বা অন্যান্য ছুটির দিনে হুটহাট লোকাল ট্রেন বাতিল করে দেওয়া হচ্ছে শিয়ালদহে। রবিবার ভোরে একটি লোকাল ট্রেন বাতিলের পরে ক্ষিপ্ত যাত্রীরা শ্যামনগর স্টেশনে অবরোধ শুরু করেন। চারটি লাইনেই ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
অবরোধকারীদের বড় অংশই ব্যবসায়ী। তাঁদের বক্তব্য, এমনিতেই তো ভোর থেকে ট্রেন চলাচলে দেরির ব্যাধি শুরু হয়ে যায়। তার উপরে আবার ট্রেন বাতিল করে দেওয়ায় রোজই মালপত্র নিয়ে আটকে পড়তে হয়। বাধ্য হয়ে তাঁরা অবরোধ শুরু করেন ভোর সওয়া ৫টায়। সকাল ৭টা নাগাদ অবরোধ উঠলেও ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হতে প্রায় এক ঘণ্টা লাগে। বাতিল হয় সাত জোড়া ট্রেন।
আমযাত্রীর অভিজ্ঞতা, শিয়ালদহ ডিভিশনে শনি ও রবিবার অহেতুক প্রচুর ট্রেন বাতিল করার রোগটা চলছে বছরখানেক ধরে। শিয়ালদহ মেন লাইনে এখন যাত্রী-সংখ্যা গড়ে ১২ লক্ষেরও বেশি। যাত্রীদের বক্তব্য, শনি-রবিবার বলে সেই অর্থে ছুটির দিন তো আর নেই। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থা এই সব দিনেও খোলা থাকে। চালু থাকছে বিভিন্ন স্কুল-কলেজও। সেই সঙ্গে রয়েছেন সেই সব যাত্রী, ভিড় এড়াতে যাঁরা শনি বা রবিবার ট্রেনে ওঠেন ফাঁকায় ফাঁকায় যাবেন বলে। এগুলো মাথায় না-রেখে রেল-কর্তৃপক্ষ ট্রেন বাতিল করে দিচ্ছেন। বাড়ছে যাত্রী-দুর্ভোগ।
রেলকর্মীদের একাংশ মানছেন, সময়ে ট্রেন চালাতে গেলে যে-দক্ষতা প্রয়োজন, শিয়ালদহে তার ঘাটতি আছে। উঁচু তলার কিছু অফিসারের গা-ছাড়া মনোভাবের ফলে অসন্তোষ বাড়ছে যাত্রীদের। রেল-বহির্ভূত কারণে এ দিন অবরোধ হয়েছে বলে দায় এড়াতে চেয়েছিলেন কিছু রেলকর্তা। কিন্তু পরে জানা যায়, ট্রেন বাতিলের জেরেই হয়েছে অবরোধ।
‘‘সকলেই সব দেখছেন। কেউই কিছু করতে পারছেন না। ভাল পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা চলছে,’’ বলেন, পূর্ব রেলের এক কর্তা।