—ফাইল চিত্র।
হাতির হানায় প্রতি বছর এ রাজ্যে বহু মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। এর জন্য প্রত্যন্ত এলাকায় বহু বাড়িতে পাকা শৌচাগার না থাকাকে অনেকাংশে দায়ী করছেন প্রশাসনিক কর্তারা। এই পরিস্থিতিতে স্বচ্ছ ভারত মিশনের আওতায় সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলিতে যেমন শৌচালয় তৈরির কাজে জোর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নবান্ন, তার পাশাপাশি হাতির যাতায়াতের জন্য নির্দিষ্ট পরিসর বা ‘করিডর’ তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সেই কাজে কয়েকশো কোটি টাকা বরাদ্দ হবে বলে খবর।
স্বচ্ছ ভারত মিশনের আওতায় প্রতি বাড়িতে শৌচাগার তৈরি করা অন্যতম লক্ষ্য। প্রত্যন্ত ও জনজাতিভুক্ত কিছু এলাকায় অবশ্য এই কাজ এখনও শেষ হয়নি। প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, হাতির হানায় বছরে গড়ে একশো জনের মৃত্যু হচ্ছে। মৃতদের অনেকের বাড়িতেই শৌচাগার নেই। মাঠেঘাটে প্রাতঃকৃত্য করতে গিয়ে অনেকে হাতির হামলার মুখে পড়েছেন। তাই প্রতি বাড়িতে শৌচাগার তৈরিতে জোর দিতে নির্দেশ।
নবান্নের আরও সিদ্ধান্ত, আগামী পাঁচ বছরে অন্তত ৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে রাজ্যে সাতটি হাতি করিডর তৈরি করবে রাজ্য। তার রূপরেখাও চূড়ান্ত হয়েছে। এক একটি করিডর পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ ও অন্তত ৪০০ মিটার চওড়া হবে। তাই দুই বর্গ কিলোমিটার আয়তনের একটি করিডরের জন্য ৬২৫ থেকে ১০০০ হেক্টর জমি প্রয়োজন। তার মধ্যে হাতির পালের জন্য খাবার, জলের বন্দোবস্ত থাকবে। ওই করিডর ঘিরে রাখা হবে। এক কর্তার কথায়, “জমির ব্যবস্থা হয়েছে। হাতির চলার পথে খাবার, জলের ব্যবস্থা থাকলে তারা অন্য দিকে মোড় নেবে না।”
প্রশাসনের খবর, করিডর তৈরির পরের ধাপে হাতির গলায় ‘কলার’ পরানো যায় কি না, তা খতিয়ে দেখবে রাজ্য। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে সেই কলারের সঙ্কেত বিশ্লেষণ করে লোকালয়ে হাতির হানা ঠেকাতে পদক্ষেপ করবে বন দফতর। এই ব্যাপারে কর্নাটক এবং কেরল সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন এ রাজ্যের প্রশাসনিক কর্তারা। ওই দুই রাজ্যের মধ্যে কর্নাটকে হাতির হানার সমস্যা ছিল বেশি। তারা সফল ভাবে তা নিয়ন্ত্রণে এনেছে। ওই কর্তার দাবি, “কর্নাটক, কেরল এবং ওড়িশায় এই সমস্যা নিয়ে কাজ হয়েছে। কিন্তু আমরা কর্নাটক এবং কেরলের পদ্ধতিকে অনুসরণ করছি।”