বাঁধ নির্মাণের কাজ চলছে।
বছর ঘুরতে চলল। এখনও শেষ হয়নি সমুদ্র বাঁধ নির্মাণের কাজ। ফলে নতুন করে ভাঙনের আশঙ্কায় দিন কাটচ্ছেন বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী রামনগর-১ ব্লকের পাঁচটি গ্রামের বাসিন্দারা।
দিঘা মোহনার অদূরে থাকা মৈত্রাপুর মৎস্যজীবীদের গ্রাম বলে পরিচিত। সেখানে বঙ্গোপসাগরের তীরে সমুদ্র বাঁধ নির্মাণের কাজ চলছে দীর্ঘদিন ধরে। প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকাজুড়ে এই বাঁধ তৈরি করছে সেচ দফতর। তার জন্য চার কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে। সমুদ্রের মহীসোপান এলাকায় কাঠের রেলিং, পাথর এবং বালি, মাটির বস্তা দিয়ে কংক্রিটের ঢালাই করে ওই বাঁধ দেওয়া হচ্ছে। বাঁধের উপরে হচ্ছে জিও ব্যাগও। বাঁধ হলে সমুদ্রের ঢেউ আর পাড়ে সোজাসুজি এসে ধাক্কা মারতে পারবে না।
গত কয়েক বছর ধরে মৈত্রাপুর এলাকা সমুদ্রের ঢেউয়ে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পুরনো বাঁধের গায়ে ঢেউয়ের আঘাতে গর্ত তৈরি হয়ে গিয়েছে। এছাড়া, ভাঙনে ওই এলাকার কিছুটা অংশ সমুদ্র গর্ভে চলে গিয়েছে। ভবিষ্যতের কথা ভেবে চিন্তি ছিলেন মৈত্রাপুর, পূর্ব মুকুন্দপুর, মির্জাপুর, আসনপুর, ঘেরসাই প্রভৃতি গ্রামের কয়েক হাজার বাসিন্দা। গত অগস্টে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার প্রশাসনিক সফরে এসে ওই গ্রামে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানকার মৎস্যজীবী পরিবারগুলির আর্থিক দুর্দশা সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ওই গ্রামে সমুদ্র বাঁধ নির্মাণের কাজ ধীর গতিতে চলছে বলে স্থানীয়েরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ করেছিলেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেখানকার একাধিক বাসিন্দার অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী ফিরে যাওয়ার পরে আট মাস কেটে গিয়েছে। অথচ সমুদ্র বাঁধের কাজ অর্ধেকও শেষ হয়নি। বর্ষাকালে সমুদ্র প্রচন্ড উত্তাল থাকে। সে সময় বাঁধ ভেঙে জল লোকালয়ে ঢুকে পড়তে পারে বলে দুশ্চিন্তা গ্রামবাসীদের।
সেচ দফতরের দাবি, গত চার মাস ধরে লকডাউন চলায় ওই এলাকায় সমুদ্র বাঁধ নির্মাণের কাজ করা যায়নি। এখন লকডাউন শিথিল হওয়ার পরে ওই বাঁধ নির্মাণের কাজ পুনরায় শুরু হয়েছে বলে জানাচ্ছে দফতর। এ প্রসঙ্গে সেচ দফতরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার (কাঁথি) স্বপনকুমার পণ্ডিত বলেন, ‘‘সমুদ্র ভাঙন ঠেকানোর জন্য ওই এলাকায় একটি বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। ওই নির্মাণ কাজ ৪০ শতাংশ হয়ে গিয়েছে।’’ বাকি কাজ কবে শেষ হবে, সে ব্যাপারে অবশ্য কোনও প্রতিক্রিয়া জানাতে রাজি হননি সেচ দফতরের আধিকারিকেরা।