—প্রতীকী ছবি।
ঘড়ির কাঁটায় তখন রাত ১২টা পেরিয়ে গিয়েছে। বুথের বাইরে অঝোরে বৃষ্টি। তা উপেক্ষা করেই মাথাভাঙা-২ ব্লকের পারডুবি পঞ্চায়েতের একটি বুথে তখনও ভোটের লাইন। হিন্দুস্থান মোড় সংলগ্ন দক্ষিণ বড়াইবাড়ি ১১০ নম্বর বুথটিতে ছাতা মাথায় তখনও অপেক্ষায় শতাধিক পুরুষ-মহিলা। দিনভর ডিউটি করে পোলিং অফিসারদেরও তখন হাত আর চলছে না। পার্ট নম্বর, সিরিয়াল নম্বর লিখে ব্যালট দিতেই লেগে যাচ্ছে দু’-তিন মিনিট। বুথের বাইরে চেয়ারে বসে লম্বা হাই তুলছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর বন্দুকধারীরা।
ভোটারদের মধ্যে কেউ কেউ স্কুলের বারান্দায় উঠে পড়েছেন। চোখ হয়তো মোবাইল ফোনে। কেউ বিকেল পাঁচটায় দেওয়া টোকেন নিয়ে বাড়ি চলে গিয়েছিলেন। ফিরে এসে দাঁড়াচ্ছেন ভোটের লাইনে। সব শেষে ভোট দিয়ে মুখে তৃপ্তির হাসি। গ্রামবাসীরা বলছেন, কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা সুনিশ্চিত হতেই শান্তির ভোট দেখল বড়াইবাড়ির ১১০ নম্বর বুথ। হরেকৃষ্ণ রাজবংশী নামে এলাকার এক বাসিন্দা বললেন, ‘‘মধ্যরাতে পঞ্চায়েত ভোট দিলাম, এ এক অন্য অনুভূতি!’’ এক মহিলা ভোটার বললেন, ‘‘ভোট দিলাম। এখন বাড়ি গিয়ে রান্না করব।’’ ব্যালট বাক্স সিল করে যখন ভোটকর্মীরা রিসিভিং সেন্টারে পৌঁছন, রাত দুটোর কাঁটা পেরিয়ে গিয়েছে। একই ভাবে বৃষ্টির মধ্যে মাথাভাঙা-১ ব্লকের পচাগর পঞ্চায়েতের ২/২৩১ নম্বর বুথেও শনিবার রাত সাড়ে তিনটে পর্যন্ত চলে ভোটগ্রহণ। রবিবার সকালে মাথাভাঙা কলেজের ডিসিআরসি-তে ব্যালট বাক্স জমা দেওয়া হয়। শনিবার সন্ধ্যার পরেও প্রবল বৃষ্টিতে ভোটারদের লাইন করে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। মাথাভাঙা কুর্শামারি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৫/১০১ নম্বর বুথেও বৃষ্টির কারণে গভীর রাত পর্যন্ত ভোটদান প্রক্রিয়া চলে। মাথাভাঙা-১ ব্লকের বিডিও সম্বল ঝা বলেন, ‘‘প্রবল বৃষ্টিতে বেশ কিছু বুথে রাত পর্যন্ত ভোট চলে।’’
এ ভাবেই নির্বাচন হয়েছে কোচবিহারের বেশ কিছু বুথে। ভোট শেষ হয়েছে শেষ রাতে। অশান্তি না হওয়ায় রাত গভীর হলেও সমস্যা হয়নি বলে জানান এক ভোট কর্মী। বরাইবাড়ি ১১০ নম্বর বুথের প্রিসাইডিং অফিসারের কথায়, ‘‘এত ভোটার, তিনটে করে ব্যালট। তাই ভোট শেষ হতে রাত হয়ে গিয়েছে।” দুই পাহাড়ি জেলায় প্রায় ৭০ শতাংশ বুথে রাত ৭-৮টা অবধি ভোট চলেছে। দার্জিলিঙের জেলাশাসক এস পুন্নমবলম বলেন, ‘‘তবে কোথাও কোনও সমস্যা হয়নি।’’
তথ্য সহায়তা: কৌশিক চৌধুরী, উৎপল অধিকারী