দার্জিলিং থেকে কাঞ্চনজঙ্গা। রবিবার। নিজস্ব চিত্র।
সিকিমে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের প্রভাব পড়ল এ রাজ্যের পাহাড় ও ডুয়ার্সের পুজো পর্যটনে। পঞ্চমীর দিন থেকে দার্জিলিং, কার্শিয়াঙে পর্যটকদের ভিড় শুরু হলেও আগের বছরগুলির মতো তা উপচে পড়া নয়। পুজোর ক’টা দিন কিছু বুকিং থাকলেও দশমীর পর থেকে তা একেবারে কমে গিয়েছে। দিঘা, মন্দারমণিতেও পর্যটকের তেমন ভিড় নেই। ব্যবসায়ীদের কথায়, গত বার করোনার শেষ দিকে সবাই বাইরে বেরোতে চাইছিলেন। এ বার পরিস্থিতি স্বাভাবিক। মানুষ নিজের শহরেই পুজো দেখতে ব্যস্ত।
উত্তরে সিকিম, কালিম্পংগামী ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক টানা ১৭ দিন বন্ধ ছিল। সপ্তমীতে তা চালু হয়েছে। কিন্তু বহু পর্যটক আগেই তাঁদের প্যাকেজ বাতিল করেছেন। ঘুরপথে ঘোরার ঝক্কি এবং খরচ বাড়ার আশঙ্কাতেই বুকিং বাতিল হয়েছে বলে ধারণা ব্যবসায়ীদের একাংশের। হোটেল বুকিং ৬০-৬৫ শতাংশের আশপাশে। সিকিম, কালিম্পঙের প্রভাব পড়েছে দার্জিলিঙেও। কারণ, বেশির ভাগ ভিন্ রাজ্যের পর্যটক দার্জিলিং, কালিম্পং, সিকিম মিলিয়ে ঘুরতে আসেন। বাঙালি পর্যটকেরাও রাস্তা খারাপ থাকায় কেউ বুকিং বাতিল করেছেন, কেউ পিছিয়ে নিয়েছেন। কেউ চলে গিয়েছেন নেপাল বা ভুটানে। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি গত গ্রীষ্ম বা গত বছরের পুজোর ধারেকাছেও নয়।
জিটিএ প্রধান অনীত থাপা বলেন, ‘‘৪ অক্টোবর সিকিমের সঙ্গে কালিম্পং জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা বিপর্যস্ত হয়। রংপোতে বহু মানুষ এখনও ত্রাণ শিবিরে। আশা করা যায়, দেওয়ালির মধ্যে পর্যটনের পরিস্থিতি আরও স্বাভাবিক হবে।’’ করোনার দু’বছর বাদ দিলে ২০২২ সালে পাহাড়ে-ডুয়ার্সে পুজোর সময় তিল ধারণের জায়গা ছিল না। এ বছর অগস্ট মাস থেকে বুকিং ভালই হয়। কিন্তু তিস্তার রুদ্ররূপ সব হিসাব পাল্টে দিয়েছে। তা মেনে নিয়েই হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘সিকিম, কালিম্পঙের রাস্তা সপ্তমীতে খুলল। দার্জিলিং-কালিম্পঙের রাস্তাও বন্ধ ছিল। অনেকেই বুকিং করেও পিছিয়ে গিয়েছেন।’’
কেমন ছবি দক্ষিণবঙ্গের? রবিবার সকাল থেকেই দিঘা, মন্দারমণির আকাশ ছিল পুরোপুরি মেঘাচ্ছন্ন। তবে দু’-এক বার সূর্যের দেখা মিলেছে। নিম্নচাপের প্রভাব এখনও পড়েনি সমুদ্রে। ফলে একেবারেই শান্ত ছিল সমুদ্র। এ দিন সকাল থেকে দিঘা এবং মন্দারমণিতে পর্যটকের দল আসতে শুরু করলেও, ভিড় সে রকম নয়— জানাচ্ছেন স্থানীয় হোটেল ব্যবসায়ীরা। তাঁদের মতে, করোনার শেষ দিকে সবাই বেরোতে চাইছিলেন। এ বার সেই পরিস্থিতি নেই। তবে ব্যবসায়ীদের আশা— নবমী এবং দশমী থেকে লক্ষ্মী পুজো পর্যন্ত দিঘা, মন্দারমণিতে পর্যটকের আগমন বাড়বে।