আধারের ‘ভুল’ আগলাতে ভোটার কার্ডে বদল!

‘ভুল’ নামটিকেই আঁকড়ে ধরতে চাইছেন শওকত-রঞ্জিতদের মতো অনেকে।

Advertisement

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২০ ১২:০০
Share:

প্রতীকী ছবি।

আধার কার্ডে নাম রয়েছে শওকত আলি (নাম পরিবর্তিত)। ‘এপিক’ বা ভোটার পরিচয়পত্রে তিনি মহম্মদ শওকত আলি। সেই নামটি ঠিক। তেমনই ভোটার পরিচয়পত্র রয়েছে রঞ্জিত দাস (নাম পরিবর্তিত)। আধার কার্ডে তিনি হয়ে গিয়েছেন রণজিৎ দাস। আদতে তিনি কিন্তু রঞ্জিতই।

Advertisement

তবু ‘ভুল’ নামটিকেই আঁকড়ে ধরতে চাইছেন শওকত-রঞ্জিতদের মতো অনেকে। কারণ, নাগরিকত্ব প্রমাণের আশঙ্কা থাকায় ভোটার কার্ডে উল্লিখিত নাম আর আধার কার্ডে দেওয়া নামের মধ্যে ফারাক রাখতে চাইছেন না শওকত-রঞ্জিতেরা। তাই জেনেবুঝেই আধার কার্ডের ‘ভুল’-কে প্রাধান্য দিয়ে ভোটার কার্ডের ঠিক নামটি বদলাতে চাইছেন। কারণ, এখন ভোটার তালিকায় বিশেষ সংক্ষিপ্ত সংশোধন প্রক্রিয়া চলছে। যা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নিজের এলাকার ভোটগ্রহণ কেন্দ্রেই হচ্ছে। একই সঙ্গে ভোটার তালিকা সংশোধন সংক্রান্ত কাজ হচ্ছে অনলাইনেও। রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা এ ক্ষেত্রে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন। ফলে অনেক দ্রুত ভোটার কার্ড পরিবর্তনের সুযোগ মিলছে। সেই সুযোগটাকেই কাজে লাগাতে চাইছেন অনেক ভোটার।

কিন্তু কেউ কেউ আধার কার্ডের ‘ভুল’-কেই আঁকড়ে ধরতে চাইছেন কেন? কারণ, ভোটার কার্ড সহজে পরিবর্তন করা গেলেও আধার কার্ডের ভুল শোধরাতে নাজেহাল অবস্থা আমজনতার। কারণ, নির্দিষ্ট ব্যাঙ্ক বা ডাকঘরে আধারের ভুল সংশোধনের ব্যবস্থা হয়েছে ঠিকই। কিন্তু সেখানে আগে থেকে নাম নথিভুক্ত করাতে হবে। তার পরে সেই ব্যাঙ্ক বা ডাকঘর সংশোধনের জন্য দিন ধার্য করলে তবেই মিলবে সুযোগ। দিনের পর দিন লাইনে দাঁড়িয়েও সেই সংশোধনের জন্য ব্যাঙ্ক বা ডাকঘরে তারিখ মিলছে না। আধার কার্ড সংশোধনের জন্য রাত জাগছেন অনেকে। কিন্তু কাজের কাজ হচ্ছে না বলে তাঁদের অভিযোগ।

Advertisement

এই অবস্থায় আধার সংশোধনের তুলনায় ভোটার পরিচয়পত্রে অদলবদল অনেকাংশে সহজ। সেই সহজ পদ্ধতিকে কাজে লাগিয়ে সব সরকারি নথিতে একই নাম, পদবির ব্যবস্থা করতে চাইছেন ভোটারেরা। এক ভোটারের কথায়, ‘‘নাগরিকত্বের ভয় রয়েছে। আলাদা আলাদা নথিতে অভিন্ন নাম-পদবি থাকলে আমি যে একই ব্যক্তি, সেটা হয়তো বিশ্বাস হবে সরকারের। তাই যেটা সহজে হয়, সেটাই করতে চাইছি।’’

এখনও পর্যন্ত কমিশনের নির্দেশ অনুসারে বঙ্গে ভোটার তালিকার বিশেষ সংক্ষিপ্ত সংশোধনী প্রক্রিয়া চলবে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। তবে গঙ্গাসাগর মেলার জন্য দক্ষিণ ২৪ পরগনায় সেই প্রক্রিয়া আরও পাঁচ দিন বাড়িয়ে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসারের (সিইও) দফতর। এই সংশোধনী পর্বে এ-পর্যন্ত রাজ্যে সংযোজন, বিয়োজন এবং সংশোধন মিলিয়ে ১৬ লক্ষ আবেদনপত্র জমা পড়েছে। প্রতিটি আবেদনপত্র একাধিক বার খতিয়ে দেখার জন্য জেলাশাসকদের নির্দেশ দিয়েছেন সিইও আরিজ আফতাব। কাল, বৃহস্পতিবার ভোটার তালিকার সংক্ষিপ্ত সংশোধনী প্রক্রিয়ার গতিপ্রকৃতি নিয়ে জেলাশাসকদের সঙ্গে ভিডিয়ো-সম্মেলন করার কথা সিইও দফতরের কর্তাদের। ওই দিন উত্তর ২৪ পরগনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্মসূচি রয়েছে। তাই সেখানকার জেলাশাসকের ভিডিয়ো-সম্মেলনে থাকার সম্ভাবনা নেই। একই ভাবে গঙ্গাসাগর মেলার জন্য দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসকের পরিবর্তে অতিরিক্ত জেলাশাসকের ভিডিয়ো-সম্মেলনে থাকার কথা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement