— ফাইল চিত্র।
পেনশন প্রাপকদের জন্য আরও একটি বিশেষ সুবিধা দেওয়ার কথা ঘোষণা করল নবান্ন। মঙ্গলবার অর্থ সচিব মনোজ পন্থ একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন। সেই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, এ বার থেকে স্মার্টফোনেই পেনশন প্রাপকরা নিজেদের ‘ফেস অথেন্টিকেশন’ করিয়ে ‘লাইফ সার্টিফিকেট’ জমা দিতে পারবেন। এত দিন নিয়ম ছিল, কোনও পেনশন প্রাপক বা তাঁর পরিবারের কোনও পেনশন প্রাপককে নিজের জীবিত থাকার প্রমাণ দিতে হত সরকারের কাছে। যা প্রতি বছর নভেম্বর মাসে সরকারের ঠিক করে দেওয়া একটি ‘ফরম্যাট’ মেনে তা জেলার ট্রেজারি কিংবা ব্যাঙ্কে জমা দিতে হত। এ ক্ষেত্রে দু’টি নিয়ম চালু ছিল। প্রথম নিয়মে ব্যাঙ্ক বা ট্রেজারিতে গিয়ে পেনশন প্রাপক নিজের জীবিত থাকার বিষয়ে প্রত্যাযয়িত প্রমাণপত্রের কপি জমা দিতে পারতেন।
দ্বিতীয় নিয়মে সরকারি একটি পোর্টালে প্রবেশ করে ‘লাইফ সার্টিফিকেট’ আপলোড করে দেওয়া যেত। এ ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের জীবন প্রমাণ পোর্টালে এই প্রমাণপত্রটি আপলোড করতে হত। তবে নতুন পদ্ধতিতে স্মার্টফোনে ‘লাইফ সার্টিফিকেট’ জমা দিতে গেলে ‘ফেস অথেন্টিকেশন’ করা বাধ্যতামূলক হবে। ‘ফেস অথেন্টিকেশন’ দিয়ে তবেই লাইফ সার্টিফিকেট জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যাবে। পোর্টালে গিয়ে নিজের ‘বায়োমেট্রিক’ পরিচিতি দিলে তবেই লাইফ সার্টিফিকেট জমা নেওয়া হবে। সে ক্ষেত্রে ‘লাইফ সার্টিফিকেট’টি কোনও উচ্চপদস্থ আধিকারিককে নিয়ে প্রত্যায়িত করানোর প্রয়োজন পড়বে না। তবে ব্যাঙ্কে বা ট্রেজারিতে গিয়ে যে ‘লাইফ সার্টিফিকেট’ জমা দিতে হবে, তা কিন্তু প্রত্যায়িত হতেই হবে।
আগামী সেপ্টেম্বর মাসের ৭ তারিখ থেকে এই নতুন নিয়ম কার্যকর হয়ে যাবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। তাই আগামী ১ নভেম্বর থেকে নতুন প্রযুক্তিতে জীবনের প্রমাণপত্র জমা দেওয়ার সুযোগ পাবেন পেনশন প্রাপকরা। তবে পেনশন প্রাপক চাইলে সশরীরে ট্রেজারি কিংবা ব্যাঙ্কে হাজির হয়ে নিজেদের ‘লাইফ সার্টিফিকেট’ জমা দিতে পারবেন। সরকারের এই নতুন পদ্ধতির ঘোষণাকে সিনিয়র সিটিজেন এন্ড পেনশনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সভাপতি মনোজ চক্রবর্তী স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘যাঁরা পেনশন পান, তাঁরা সবাই বয়স্ক। অনেকে আবার অথর্ব হয়ে পড়েছেন। ব্যাঙ্কে বা ট্রেজারিতে লাইন দিয়ে লাইফ সার্টিফিকেট জমা দেওয়া তাঁদের পক্ষে বেশ কষ্টকর। তাই স্মার্টফোনের মাধ্যমে ‘ফেস অথেন্টিকেশন’ করিয়ে ‘লাইফ সার্টিফিকেট’ দাখিল করার পদ্ধতি চালু হওয়ায় আমাদের মতো বয়স্ক মানুষদের পক্ষে সুবিধা হবে। রাজ্য সরকার নতুন এই পদ্ধতি চালু করায় আমাদের মতো প্রবীণ নাগরিকরা খুশি হবেন।’’ নবান্ন সূত্রে খবর, ২০১৯ সাল থেকেই নতুন এই পদ্ধতি চালু করার বিষয়ে প্রশাসনিক স্তরে আলোচনা চলছিল। কোভিড সংক্রমণ ও ভোটের কারণে এই বিষয়টি পিছিয়ে যায়। অবশেষে মঙ্গলবার এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা সম্ভব হল।