রেল-কর্তৃপক্ষকে একাধিক চিঠি দেওয়ার সঙ্গে হাওড়ায় ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজারের কার্যালয়ে বিক্ষোভও হয়। প্রতীকী ছবি।
ডানকুনি রেলওয়ে সাইডিংয়ে বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে পূর্ব রেলের তরফে গৃহীত ব্যবস্থায় পিসিবি বা দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ যে সন্তুষ্ট নয়, তাদের কড়া পদক্ষেপেই তা প্রমাণিত। রেলের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নিয়ে কুড়ি লক্ষ টাকা ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি জমা রাখার নির্দেশ দিয়েছে পর্ষদ। আট দফা ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
ডানকুনি রেলওয়ে সাইডিংয়ে প্রবল বায়ুদূষণের অভিযোগে তুলে পিসিবি-র দ্বারস্থ হয় এআইটিইউসি-র পরিবহণ শ্রমিকদের সর্বভারতীয় সংগঠন। রেল-কর্তৃপক্ষকে একাধিক চিঠি দেওয়ার সঙ্গে হাওড়ায় ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজারের কার্যালয়ে বিক্ষোভও হয়। অভিযোগ পেয়ে পিসিবি-র আধিকারিকেরা ওই সাইডিং পরিদর্শন করেন।
ডানকুনি স্টেশনের ৫০০ মিটারের মধ্যে অবস্থিত ওই সাইডিংয়ের মাধ্যমে মূলত কয়লা, ইস্পাতের চাদর, সিমেন্ট, আলকাতরা, চিনি, গম-সহ নানা রকম শস্য, লবণ পরিবহণ করা হয়। ইস্পাতের চাদরের মতো পণ্য সরাসরি মাটিতে ফেললে প্রচুর ধুলো উড়ে দূষণ ছড়ায়। তা আটকাতে সাইডিংয়ে কংক্রিটের তৈরি প্ল্যাটফর্ম বা হোয়ার্ফ করা হয় ও পণ্য নামানো হয় সেখানেই। ডানকুনিতে চারটি হোয়ার্ফ থাকলেও বাতাসে ধুলোর পরিমাণ খুব বেশি ছিল বলে জানায় পর্ষদ। রেলের তরফে হোয়ার্ফ নিয়মিত পরিষ্কার করা, জল দিয়ে ধোয়ার কথা জানানো হলেও পর্ষদ তাতে সন্তুষ্ট হয়নি।
পণ্য ওঠানো-নামানোর সময় ‘মাউন্টেড স্প্রিংকলার’ বা কম উচ্চতায় জল ছেটানোর ব্যবস্থা করা ছাড়াও কুয়াশা কমাতে ধূলিকণা শুষে নেওয়ার কামান ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছে পর্ষদ। সাইডিং সংলগ্ন এলাকায় গাছ লাগানোর কথাও বলা হয়েছে। রেললাইনের ধারে পণ্য মজুত রাখার জন্য ঢাকা দেওয়া গুদামের অভাবের কথাও উঠে এসেছে পর্যবেক্ষণে।
রেলের দাবি, পণ্য ওঠানো-নামানোর বৈধ অনুমতি আছে তাদের। এআইটিইউসি-র পরিবহণ শ্রমিক সংগঠনের সর্বভারতীয় সম্পাদক নওলকিশোর শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘রেল-কর্তৃপক্ষকে বার বার জানিয়ে ফল না-হওয়াতেই পর্ষদের দ্বারস্থ হতে হয়েছে আমাদের।’’ পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী বলেন, ‘‘দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের যাবতীয় নির্দেশ মেনে চলবে রেল।’’