TMC

তৃণমূল একটা ‘কোম্পানি’ আর মমতা তার ‘ব্র্যান্ড’, বললেন দলীয় বিধায়ক, দল বলল, অবাঞ্ছিত

শুধু দল নয়, তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিদেরও ‘মেডিক্যাল রিপ্রেজ়েন্টেটিভ’ বলে মন্তব্য করেন বিধায়ক। যার জেরে দলের অন্দরেই প্রবল সমালোচনার মুখে পড়তে হল তাঁকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হাওড়া শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২৩ ১৬:২৪
Share:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল ছবি।

রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কটাক্ষকে ‘স্বীকৃতি’ দিয়ে দিলেন খোদ শাসকদলেরই বিধায়ক! নিজের দলকে ‘কোম্পানি’ এবং দলের জনপ্রতিনিধিদের ‘মেডিক্যাল রিপ্রেজ়েন্টেটিভ’ বলে মন্তব্য করে বসলেন উত্তর হাওড়ার তৃণমূল বিধায়ক গৌতম চৌধুরী। এখানেই থেমে থাকেননি বিধায়ক। তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দলের ‘ব্র্যান্ড’ বলেও অভিহিত করেন তিনি। বিধায়কের এই মন্তব্যকে হাতিয়ার করে শাসকদলকে বিঁধতে শুরু করেছে বিজেপি।

Advertisement

ঘটনাচক্রে, সম্প্রতি উত্তর হাওড়ায় জল জমার সমস্যা নিয়ে নিজের দল পরিচালিত পুরসভার বিরুদ্ধেই রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন গৌতম। তার জন্য প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধমকও খেয়েছিলেন। এ বার দল নিয়েই বিতর্কিত মন্তব্য করে সমালোচনার মুখে পড়লেন বিধায়ক। তাঁর মন্তব্য প্রসঙ্গে তৃণমূল মুখপাত্র তথা দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘বিভ্রান্তিমূলক এবং অবাঞ্ছিত মন্তব্য। উনি কী বলতে চেয়েছেন, আমি জানি না। শব্দপ্রয়োগ ঠিক নয়। তৃণমূল একটা পুরোদস্তুর রাজনৈতিক দল। দলের সকলেই রাজনৈতিক কর্মী। তবে এটা বিষয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই আমাদের প্রধান মুখ। তাঁকে সামনে রেখেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।’’ বিধায়ককে ইতিমধ্যেই দল সতর্ক করেছে বলে জানান হাওড়া সদরের তৃণমূল সভাপতি কল্যাণ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘গৌতম চৌধুরীর সঙ্গে রাজ্য ও জেলা নেতৃত্বের কথা হয়েছে এ বিষয়ে। উনি জানিয়েছেন, ভুলবশত এই মন্তব্য করেছেন।’’

২০২০ সালে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই পুরনো দল তৃণমূলকে ‘প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি’ বলে কটাক্ষ করে থাকেন শুভেন্দু। গত বৃহস্পতিবার জগৎবল্লভপুরের দক্ষিণ ঝাপরদহে দলের একটি কর্মিসভায় বক্তৃতা করতে গিয়ে শুভেন্দু বলেছেন, ‘‘তৃণমূল একটা প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি। ওই কোম্পানির মালিক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর ভাইপো ম্যানেজিং ডিরেক্টর।’’ যার সপাট জবাবও মমতা এবং অভিষেক দু’জনেই দিয়ে থাকেন। শুক্রবার জেলায় ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ নিয়ে একটি সাংবাদিক বৈঠকে গৌতম বলেন, ‘‘তৃণমূল একটা কোম্পানি। যার ব্র্যান্ড হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আমরা কেউ কিছু নই। আমরা জনপ্রতিনিধিরা একটা ওষুধ কোম্পানির মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভের মতো। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই দলের সব।’’

Advertisement

বিধায়কের এই মন্তব্যের জেরে বেজায় অস্বস্তিতে পড়েছে শাসকদল। যদিও বিধায়ক-ঘনিষ্ঠ এক নেতার দাবি, ‘‘শুভেন্দু অধিকারী যে ভাবনা থেকে ওই শব্দবন্ধ প্রয়োগ করেন, গৌতম’দা মোটেই সেই ভাবনা থেকে ওই কথাগুলো বলেননি। কাজের ধরন নিয়ে বলতে গিয়েই হয়তো ওই কথা বলে ফেলেছেন উনি। এটা নিয়ে অহেতুক বিতর্ক তৈরি করার কোনও মানে হয় না।’’

এ নিয়ে অবশ্য কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না গেরুয়া শিবির। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘সত্যি কথাটাই উনি বলে ফেলেছেন। ওই দলে যাঁরা আছেন, সকলেই বসের কথা শুনে কাজ করেন। তৃণমূল দল গণতন্ত্র মানে না। ওই দলেও গণতন্ত্র নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement