প্রতীকী ছবি।
নদীর চরে মাটি খুঁড়ে হাড়গোড়, খুলি উদ্ধার করল সিআইডি। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে শুক্রবার রাতে সন্দেশখালির টোংতলি গ্রামে ডাঁসা নদীর চরে খোঁড়াখুঁড়ি করা হয়। শনিবার সকালে তা বাক্সবন্দি করে পাঠানো হয় ময়নাতদন্তের জন্য। বসিরহাট জেলা হাসপাতালের সুপার শ্যামল হালদার বলেন, ‘‘একটি মাথার খুলি এবং তিনটি হাড় আনা হয়েছিল। এখানে দেহাবশেষের ময়নাতদন্ত হওয়ার মতো পরিকাঠামো নেই। দেহাবশেষ এনআরএস হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’’
এই ঘটনায় অন্য বিতর্ক দানা বেঁধেছে।
বিজেপির দাবি, দেহাবশেষ তাঁদের দলের কর্মী দেবদাস মণ্ডলের। মাস আটেক আগে সন্দেশখালি ব্লকের ন্যাজাটের ভাঙিপাড়ায় তৃণমূল-বিজেপির সংঘর্ষে দু’পক্ষের ৩ জনের প্রাণ যায়। ঘটনার পর থেকে দেবদাস নিখোঁজ। যে এলাকা
থেকে হাড়গোড় উদ্ধার হয়েছে, ভাঙিপাড়া সেখান থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে। তবে বসিরহাট জেলা বিজেপির সহ সভাপতি দুলাল রায় বলেন, ‘‘উদ্ধার হওয়া দেহ আমাদের দেখতে দেওয়া হয়নি। তা দেবদাসের বলেই আমাদের মনে হচ্ছে।’’ দেবদাসের স্ত্রী সুপ্রিয়াও বলেন, ‘‘স্বামীকে খুন করে দেহ গুম করার জন্য পুঁতে দেওয়া হয়েছিল নদীর চরে।’’
সিআইডি সূত্রের খবর, মৃতের পরিচয় এখনই বলা সম্ভব নয়। দেহাবশেষ ডিএনএ পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে টোংতলি গ্রামে ডাঁসা নদীর পাশে মাটি কাটতে গিয়ে কিছু হাড়গোড় দেখতে পান স্থানীয় মানুষ। খবর পেয়ে সিআইডির পাঁচজনের দল ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। মাটি খুঁড়ে উদ্ধার হয় দেহাবশেষ।
পুলিশ জানায়, ভাঙিপাড়ায় সংঘর্ষের দিন কুড়ি পরে তদন্তে নামে সিআইডি। কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হলেও খোঁজ মেলেনি দেবদাসের। মূল অভিযুক্তও অধরা। এ দিকে, সিআইডি তদন্তে ভরসা না রাখতে পেরে গত বছর নভেম্বর মাসে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন দেবদাসের বাবা বাসুদেব মণ্ডল। তদন্তের অগ্রগতি জানাতে সিআইডিকে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। আগামী কাল, সোমবার মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য রয়েছে।
ভাঙিপাড়ার ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি আগেই তুলেছে বিজেপি। দলের
একটি সূত্রে দাবি করা হয়েছে, হাইকোর্ট সিআইডি তদন্তে সন্তুষ্ট না হলে তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে চলে যেতে পারে। শুনানির দু’দিন আগে রাতবিরেতে মাটি খুঁড়ে হাড়গোড় উদ্ধারের ঘটনা সে দিক থেকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন পুলিশ কর্তাদের একাংশও।