Teacher Recruitment Scam Case

সিবিআই ‘গব্বর’! কেন শান্তিপ্রসাদের আইনজীবী আদালতে টানলেন ‘শোলে’ সিনেমার ভিলেনের কথা?

নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্তদের জামিনের আবেদন খারিজ হয়েছে। আগামী ২ মার্চ পর্যন্ত তাঁরা জেল হেফাজতেই থাকবেন। ওই শুনানিতেই অভিযুক্তদের আইনজীবীরা তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৮:৪৭
Share:

জামিনের মামলার শুনানিতেই অভিযুক্তদের আইনজীবীরা তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। — ফাইল ছবি।

অপরাধী কেউ হতেই পারেন, কিন্তু তাঁর তো একটা বিচার হবে! নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানিতে এই প্রশ্নই তুললেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, শান্তিপ্রসাদ সিন্‌হার আইনজীবীরা। ক্ষোভপ্রকাশ করলেন তদন্তের গতি নিয়ে। এই প্রসঙ্গে টেনে আনলেন বিবিসির দফতরে আয়কর ‘সমীক্ষা’র কথাও। শান্তিপ্রসাদের আইনজীবী আদালতে জানান, বিবিসির মতো সংবাদমাধ্যমের দফতরে ‘আয়কর হানা’ হলে, যে কোনও মানুষ যে কোনও সময় ‘অপরাধী’ হতে পারেন। বৃহস্পতিবার এই নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় উঠে এসেছে আদানি প্রসঙ্গও।

Advertisement

বৃহস্পতিবার সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে শুনানি ছিল রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ, এসএসসির প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ, অশোক সাহা, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য সুবীরেশ ভট্টাচার্য, ‘মিড‌্লম্যান’ প্রসন্ন রায়, প্রদীপ সিংহদের। নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্তদের জামিনের আবেদন খারিজ হয়েছে। আগামী ২ মার্চ পর্যন্ত তাঁরা জেল হেফাজতেই থাকবেন। ওই মামলার শুনানিতেই অভিযুক্তদের আইনজীবীরা তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। শান্তিপ্রসাদের আইনজীবী সঞ্জয় দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘বিবিসি বিরাট সংবাদমাধ্যম। সেখানেও আইটি রেড হচ্ছে। তা হলে যে কোনও লোক, যে কোনও সংগঠন যে কোনও সময় অপরাধী হতে পারে!’’ যদিও ওই আইনজীবী জানিয়েছেন, ‘অপরাধী’ হওয়া নিয়ে তিনি কিছু বলতে চান না। তিনি সরব বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে। তাঁর কথায়, ‘‘অপরাধী কেউ হতেই পারে, কিন্তু তার তো একটা বিচার হবে। বিচার হয়ে শেষ হবে। সেটাই আমাদের কাছে দুঃখজনক, চিন্তাজনক, হতাশাজনক।’’

এই প্রসঙ্গে সঞ্জয় ‘শোলে’ সিনেমার প্রসঙ্গও তুলেছেন। আদালতে তিনি বলেন, ‘‘ওই সিনেমায় একটা সংলাপ ছিল— শো যা, নেহি তো গব্বর আ যায়েগা (ঘুমিয়ে পড়, নয়তো গব্বর এসে পড়বে)। এখন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলি তেমনই হয়েছে। যে কোনও সময়, যে কোনও মানুষ অভিযুক্ত হয়ে যেতে পারেন। এক বার অভিযুক্ত হলে তিনি সেখান থেকে আর বার হতে পারছেন না।’’ এর পরেই সঞ্জয় তদন্তের গতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, ‘‘কেউ অভিযুক্ত হতে পারেন। তাঁর বিচার চলতেই পারে। আইন অনুযায়ী সেই বিচার চলুক। বিরাট মামলা বলেও ১৯০ দিন ধরে হেফাজতে রয়েছেন অভিযুক্ত। তদন্তই শেষ হল না। তদন্ত এত বছর ধরে চললে, কবে বিচার হবে। তদন্ত চললে কাগজপত্র পাচ্ছি না। আমাদের বক্তব্য তুলে ধরতে পারছি না।’’

Advertisement

তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে একই প্রশ্ন তুলেছেন সুবীরেশের আইনজীবী তমাল মুখোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, তদন্তের জন্য যা চলছে, তা ‘ঠাট্টা’। তাঁর কথায়, ‘‘এঁরা (তদন্তকারীরা) যা খুশি করে যাবেন, আর তাঁদের জন্য একটা লোক দিনের পর দিন হেফাজতে থাকবেন কেন, তার কোনও উত্তর নেই। আদালতেও এঁরা সেই উত্তর দিতে পারেননি।’’ তদন্ত হচ্ছে না বলে আদালতে অভিযোগ করেছেন পার্থের আইনজীবী সেলিম রহমান। তাঁর কথায়, ‘‘তিনি মন্ত্রী, এ ছাড়া আর কোনও অভিযোগ আনতে পারেনি সিবিআই। বিচারের নামে মাসের পর মাস আটকে রাখা হয়েছে। যেখানে এক দিন বেকসুর খালাস করা হবে, সেখানে এই মামলায় এত দিন ধরে তদন্ত চালানো, কোনও আইনের বইতে লেখা নেই।’’

আদালতে উঠে এসেছে আদানি প্রসঙ্গও। সিবিআইয়ের তরফে জানানো হয়েছে, পার্থ-মামলা সমাজে একটি প্রভাব ফেলছে। প্রাক্তন মন্ত্রীর আইনজীবী সেই অভিযোগ মানতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘আদানির শেয়ার দুর্নীতিকাণ্ডের কি সমাজে কোনও প্রভাব নেই?’’ যদিও এই সওয়াল-জবাবের পরেও জামিন পাননি পার্থ, শান্তিপ্রসাদরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement