পার্থ চট্টোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
বারবার চার বার অনশনকারীদের সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বৈঠক হল। কিন্তু স্কুলশিক্ষকের চাকরিপ্রার্থীদের দাবির কোনও সুরাহা হয়নি শুক্রবারেও। তবে মন্ত্রীর আশ্বাস, জটিলতা কাটাতে আগামী বছর থেকে স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসি-র নিয়োগ পদ্ধতি সরল করার কথা ভাবছে শিক্ষা দফতর।
কিন্তু এ দিন শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার পরেও আন্দোলনকারীরা অনশন ভাঙেননি। মেয়ো রোডে অনশনকারীদের এক দল প্রতিনিধি দুপুরে মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যান। কিন্তু সমাধানসূত্র বেরোয়নি। এ দিন ওই প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকের পরে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘ওঁদের সমস্যা মেটানোর জন্য পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গড়ে দিয়েছি। সেই কমিটিতে আছেন শিক্ষাসচিব মণীশ জৈন, এসএসসি-র চেয়ারম্যান সৌমিত্র সরকার। অনশনকারীদের অভিযোগ দু’দিনের মধ্যে লিখিত ভাবে দিতে বলেছি। নবগঠিত কমিটি সেই সব অভিযোগ পরীক্ষা করবে। অভিযোগ সত্য হলে তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে ১৫ দিনের মধ্যে।’’
অনশনকারীদের তরফে তানিয়া শেঠ বলেন, ‘‘শিক্ষামন্ত্রী যে-কমিটি গঠন করে দিয়েছেন, আমরা তাদের কাছে অভিযোগ জমা দেব। কমিটি কী সিদ্ধান্ত নেয়, তা দেখে অনশন তোলা হবে কি না, সেই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে।’’ তবে অনশনরতদের প্রতিনিধিরা জানান, তাঁরা শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে অনেকটাই আশ্বস্ত।
এ দিন অনশনকারীদের সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রীর বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মী সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডলও। তিনি বলেন, ‘‘শিক্ষামন্ত্রীর তৈরি কমিটি অনশনকারীদের সমস্যা খতিয়ে দেখে সমাধানসূত্র বার করতে পারবে বলেই আশা করা হচ্ছে।’’
বিকাশ ভবনে পার্থবাবু এ দিন জানান, এসএসসি-র নিয়োগ প্রক্রিয়া খুব দীর্ঘ। পরীক্ষা থেকে কাউন্সেলিং পর্যন্ত অনেক স্তর রয়েছে। অনেক আইনি জটিলতা আছে। তাই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনেক সময় লেগে যায়। ‘‘আমি এই পদ্ধতি ছোট ও সরল করতে বলেছি এসএসসি-কে,’’ বলেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি জানান, এসএসসি-র পরীক্ষা প্রতি বছর করা যায় কি না, সেটাও খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে।
মন্ত্রীর বক্তব্য, এসএসসি-র শূন্য পদ ‘আপডেট’ বা হালতামামি হচ্ছে না বলে অনশনকারীরা যে-অভিযোগ করছেন, তা ঠিক নয়। এসএসসি-র গেজেটে পরিষ্কার লেখা আছে, নিয়োগ পরীক্ষার ফল যে-দিন বেরোবে, তার ১৫ দিন আগে পর্যন্ত যত শূন্য পদ থাকবে, সেটাই হল ‘আপডেটেড’ খালি পদ। সেই নিয়মেই এখন নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে। ‘ওয়েটিং লিস্ট’ মানেই প্যানেল, এটা ভুল ধারণা। ওয়েটিং লিস্টের কোনও আইনি বৈধতা নেই।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
‘‘আমরা ওঁদের অনশন তুলে নিতে বলেছি। আইন মেনে যোগ্যতা ও মেধার ভিত্তিতে যে-ভাবে নিয়োগ করা যায়, এসএসসি সেটাই করবে,’’ বলেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি জানান, সরকার অনশনকারীদের প্রতি সহানুভূতিশীল। কিন্তু সেই সঙ্গে দেখতে হবে, যাঁরা অনশন করছেন, তাঁদের সকলেই শিক্ষকতা করার যোগ্য কি না। মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতেই নিয়োগ হবে। অনশন করলেই চাকরি হয় না।
শুক্রবার এসএসসি-র পরীক্ষায় উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীদের অনশন ২৩ দিনে পড়ল। এ দিন অনশন-মঞ্চে আসেন কবি মন্দাক্রান্তা সেন।