—ফাইল চিত্র।
কলকাতার নিজাম প্যালেস নয়। এ বার দিল্লির লোদী রোডে বসেই সিবিআইয়ের যুগ্ম-অধিকর্তা পঙ্কজ শ্রীবাস্তব পশ্চিমবঙ্গে চিট ফান্ড কেলেঙ্কারির তদন্ত চালাবেন।
কলকাতায় সিবিআইয়ের যুগ্ম অধিকর্তা পঙ্কজ শ্রীবাস্তবকে আচমকাই দিল্লিতে বদলি করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তিনি সিবিআইয়ে প্রশিক্ষণের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম-অধিকর্তা হিসেবে দিল্লিতে কাজ করবেন। একই সঙ্গে আগের মতোই তাঁকে কলকাতা জ়োন ও তিন নম্বর আর্থিক অপরাধ শাখার অতিরিক্ত দায়িত্বেও রেখে দিচ্ছে সিবিআই।
গত বছর কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের বাড়িতে সিবিআইয়ের হানার পরে এই শ্রীবাস্তবের বাড়ি কলকাতা পুলিশ ঘিরে ফেলেছিল বলে অভিযোগ। রাজ্য পুলিশ একটি প্রতারণার মামলায় শ্রীবাস্তবকে পাল্টা নোটিস পাঠায়। রাজ্য প্রশাসন বনাম সিবিআই তথা কেন্দ্রীয় সরকারের সংঘাত চরমে ওঠে।
পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের আগে সিবিআইয়ের সারদা, রোজ ভ্যালি-সহ বিভিন্ন ভুয়ো অর্থলগ্নি সংস্থার কেলেঙ্কারির তদন্ত কোন পথে এগোবে, তা নিয়ে এমনিতেই রাজনীতির জগতে জল্পনার শেষ নেই। কারণ, বহু রাজ্যেই বিরোধীদের বিরুদ্ধে বা দল ভাঙাতে সিবিআই এবং ইডি-কে কাজে লাগানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তারই মধ্যে আজ শ্রীবাস্তবের বদলি নিয়ে নানা জল্পনা শুরু হয়েছে। রাজনীতিকদের প্রশ্ন, শ্রীবাস্তবকে দিল্লিতে সরিয়ে নেওয়ার পিছনে কি কোনও রাজনৈতিক বার্তা রয়েছে? শ্রীবাস্তবকে যে ভাবে কলকাতা জ়োনের অতিরিক্ত দায়িত্বে রেখে দেওয়া হল, তাতে অদূর ভবিষ্যতে কলকাতার পূর্ণ দায়িত্ব দিয়ে অন্য কোনও অফিসারকে পাঠানোর সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
সিবিআই সদর দফতরের সূত্র বলছে, সারদা কেলেঙ্কারির চার্জশিটের খসড়া তৈরি হয়েছে। এখন তা চূড়ান্ত করার কাজ চলছে। শ্রীবাস্তব দিল্লিতে বসে স্বস্তিতে চিট ফান্ড কেলেঙ্কারির তদন্ত দেখভালের কাজ করতে পারবেন। পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ-প্রশাসনের আঁচের মুখে তাঁকে পড়তে হবে না। তবে তাঁর মূল কাজ হবে গাজিয়াবাদে সিবিআই অ্যাকাডেমিতে প্রশিক্ষণের কাজ দেখাশোনা করা। সেই দায়িত্বে এত দিন ছিলেন শরদ অগ্রবাল। তাঁকে সিবিআইয়ের স্পেশাল টাস্ক জ়োনের ভার দেওয়া হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্ট পশ্চিমবঙ্গে ভুয়ো অর্থলগ্নি সংস্থার তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার পরে ছ’বছর কেটে গিয়েছে। প্রতারণার শিকার হওয়া সর্বস্বান্ত মানুষের মধ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, কবে সিবিআই তদন্ত শেষ হবে? কবে দোষীরা শাস্তি পাবে? সিবিআই কর্তাদের দাবি, তদন্তে কোনও ঢিলেমি হয়নি। শুধু জুন মাসের ৩০ দিনেই নতুন ৩০টি এফআইআর দায়ের হয়েছে। চলতি বছরে সব মিলিয়ে মোট ১০২টি নতুন এফআইআর দায়ের করা হবে।