রাকেশের ‘নির্দেশ’ মেনেই কি পামেলার গাড়িতে মাদক রেখেছিলেন অমৃত (মাঝে)? উঠছে প্রশ্ন। —নিজস্ব চিত্র।
মাদক মামলায় আরও স্পষ্ট হয়ে উঠছে বিজেপি নেতা রাকেশ সিংহের ভূমিকা। রবিবার রাতে সূরযকুমার শাহ নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। নিউ আলিপুরে বিজেপি নেত্রী পামেলা গোস্বামী গ্রেফতার হওয়ার সময় সূরযের স্কুটারেই ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান অমৃত সিংহ নামে এক ব্যক্তি। পুলিশ সূত্রে খবর, মাদক মামলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে রাকেশ ঘনিষ্ঠ অমৃতের। প্রশ্ন উঠছে, তা হলে কি রাকেশের ‘নির্দেশ’-এই পামেলার গাড়িতে মাদক রেখেছিলেন অমৃত?
মাদক মামলায় মূল ষড়যন্ত্রকারী কে, এ বিষয়ে লালবাজারের তরফে কিছু জানানো হয়নি। যদিও তদন্তের গতিপ্রকৃতি যে দিকে এগোচ্ছে, তাতে গোয়েন্দারা মনে করছেন, এই ঘটনায় রাকেশের প্রত্যক্ষ যোগ থাকতে পারে। পুলিশ সূত্রে খবর, পামেলার গাড়িতে ছিলেন অমৃত। পুলিশ যখন পামেলাকে ধরার চেষ্টা করছে, তখন গাড়ি থেকে নেমে সূরযের স্কুটারে পালিয়ে যান তিনি। আগে থেকেই সূরয ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। অমৃতের সঙ্গে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গেও যোগাযোগ রয়েছে বলে সূত্রের খবর।
অমৃতের খোঁজে ইতিমধ্যে ৩ রাজ্যে চলছে জোর তল্লাশি। কলকাতা এবং সংলগ্ন জেলার বিভিন্ন জায়গার সিসি ক্যামেরার ফুটেজও সংগ্রহ করে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দু’ডজনের তালিকা তৈরি করে জেরা করা হচ্ছে।
১০ লক্ষেরও বেশি মূল্যের কোকেন-সহ গ্রেফতারের পর পামেলা আদালতে যাওয়ার সময় বিজেপির সর্বভারতীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের নাম করে রাকেশের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন। রাকেশ তাঁকে ফাঁসিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন। রাকেশও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করে পাল্টা সরব হন কলকাতা পুলিশের বিরুদ্ধেই। কমিশনার সৌমেন মিত্রকে ই-মেল করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন।
ঘটনার পটচিত্র বদলে যায় হাইকোর্টের মামলায় রাকেশ হেরে য়াওয়ার পর। কলকাতা পুলিশ তাঁর বাড়ি ঘিরে তল্লাশি শুরু করে। এর পর গলসি থেকে রাকেশকে গ্রেফতার করা হয়। ধরা হয় তার অনুগামী জিতেন্দ্রকুমার সিংহকেও। সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার কারণে রাকেশের দুই ছেলেকেও গ্রেফতার করা হয়। তাঁরা জামিন পেয়ে গেলেও, রাকেশ-সহ বাকিরা এখন পুলিশের হেফাজতেই রয়েছে। এ বার জালে রাকেশের আরও এক অনুগামী সূরয। তাঁর স্কুটারটিও বাজেয়াপ্ত হয়েছে। তাঁকে জেরা করে অমৃতের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ।