প্রতীকী ছবি।
ইতিমধ্যেই তিন লক্ষ ছাড়িয়েছে আবেদনের সংখ্যা। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ মনে করছে, আগামী ১১ ডিসেম্বর যে টেট হতে চলেছে তার আবেদনকারীর সংখ্যা সবমিলিয়ে সাত লক্ষ ছাড়িয়ে যেতে পারে। পর্ষদ সূত্রের খবর, টেট-এর জন্য আবেদন করা যাবে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত।
পাশাপাশি পর্ষদ মনে করিয়ে দিয়েছে, টেট পাশ মানেই কিন্তু নিয়োগ নয়। টেট-এর পরে ইন্টারভিউ এবং বাকি সব নিয়োগ পদ্ধতির পরে সফল প্রার্থীদের নিয়োগ করা হবে।
শেষ বার টেট হয়েছিল ২০২১ সালের ৩১ জানুয়ারি। এই পরীক্ষার জন্য বিজ্ঞপ্তি বেরিয়েছিল ২০১৭ সালে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০২০ সালের ১১ নভেম্বর নবান্ন সভাঘরে জানিয়েছিলেন, ২০১৭ সালের বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে ২০২১ সালে যে টেট হতে চলেছে, তার আবেদনকারীর সংখ্যা আড়াই লক্ষের মতো। পর্ষদের এক কর্তার মতে, এ বারের আবেদনকারীর সংখ্যা এখনই ২০১৭ টেটে আবেদনকারীর মোট সংখ্যার থেকে ছাড়িয়ে গিয়েছে। এই সংখ্যাটা কোথায় গিয়ে পৌঁছবে এখনই বোঝা যাচ্ছে না। পর্ষদের দাবি, বোঝাই যাচ্ছে, টেট নিয়ে এত বিক্ষোভ-আন্দোলন চললেও টেট-এর মাধ্যমে প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতার চাকরির উপরে এখনও ভরসা করছেন বহু চাকরিপ্রার্থী।
কেন এ বার টেট-এর আবেদনকারীর সংখ্যা এত বেশি?
প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের উপসচিব পার্থ কর্মকার বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘এ বার এনসিটির (ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার্স এডুকেশন) নিয়ম মেনে পরীক্ষার সব নীতি নির্ধারণ ঠিক করা হচ্ছে। ঠিক হয়েছে, এ বার ডিএলএড এবং বিএড পড়াকালীনই টেট-এ বসা যাবে। এই সুযোগ আগের কোনও টেট-এ ছিল না। ফলে এক ধাক্কায় অনেক পরীক্ষার্থী বেড়ে যাওয়ার সুযোগ থাকছে। এ ছাড়া এ বার টেট-এর সিলেবাস-সহ গাইডলাইন আগে থেকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। যা আগের কোনও টেট-এ দেওয়া হয়নি। গাইড লাইনে দেওয়া হচ্ছে মডেল প্রশ্নও। ফলে সব মিলিয়ে পরীক্ষার পাশের সুযোগও এ বার বেশি। তাই অনেকেই টেটে বসার আগ্রহ দেখাচ্ছেন।’’
১১ ডিসেম্বরের টেট-এ বসার কোনও বয়সসীমাও রাখা হয়নি। যদিও প্রাথমিকে চাকরির নিয়োগের বয়সের উর্ধ্বসীমা ৪০। তবে অনেক বেসরকারি স্কুলও এখন তাদের প্রাথমিকে নিয়োগের ক্ষেত্রে টেট পাশকে অগ্রাধিকার দেয়। ফলে অনেকেই টেট পাশ করে থাকতে চাইছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
২০১৭ সালে আড়াই লক্ষ পরীক্ষার্থী পরীক্ষার জন্য আবেদন করেছিলেন। তার মধ্যে পাশ করেছিলেন ৯৮৯৬ জন। পর্ষদ কর্তা এবং চাকরিপ্রার্থীদের অনেকের মতে, এ বার পাশের সংখ্যা অনেক বেশি হবে।
কয়েক জন আবেদনকারীর মতে, এ বারের টেট-এ যে বিষয়ভিত্তিক প্রশ্ন থাকছে, তার মধ্যে অর্ধেক প্রশ্ন হবে শিশুদের কী ভাবে পড়ানো হবে, তার উপর। বাংলা, ইংরেজি, অঙ্ক, পরিবেশবিদ্যা এবং শিশু বিকাশ ও মনস্তত্ত্বের উপরে ৩০ নম্বরের প্রশ্ন থাকবে। তার মধ্যে ১৫ নম্বর বিষয়ভিত্তিক। আর শিশুদের পড়ানোর উপরে প্রশ্ন আসবে ১৫ নম্বরের। এই পদ্ধতিতে প্রশ্ন এই বছর প্রথম। মনে করা হচ্ছে, যাঁদের পড়ানোর অভিজ্ঞতা আছে, তাঁদের পক্ষে এই ক্ষেত্রে নম্বর বেশি পাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।