প্রতীকী ছবি।
অতিমারিতে মার খেয়েছে চায়ের উৎপাদন। কিন্তু পাহাড়ের আর এক ‘ফসল’ কমলালেবু বাজার ছেয়েছে। উদ্যানপালন দফতর জানিয়েছে, গত বছরের তুলনায় এ বার কমলার গুণমানও ভাল। যদিও তাতে চাষিদের কতটা লাভ হয়েছে, তা নিয়ে সংশয় পাহাড়ে। অভিযোগ, বাজারে যে দাম মিলেছে, তাতে বড় থাবা বসিয়ে ফড়ে বা ‘মিডলম্যান’রাই লাভবান হচ্ছেন বেশি।
পাহাড়ের কমলা মূলত কেনাবেচা হয় শিলিগুড়ির নিয়ন্ত্রিত বাজারে। পাহাড়ের বাগানে চাষিদের থেকে কমলা কিনে ফড়েরা তা নিয়ে আসেন সেখানে। তাতে চাষিরা কমলা পিছু ৩-৪ টাকা দাম পান। অথচ সেই কমলাই সাত-সাড়ে সাত টাকা দরে পাইকারি বাজারে বিক্রি হয়।
দার্জিলিং এবং কালিম্পং জেলা উদ্যানপালন দফতরের তরফে জানা গিয়েছে, এখন মিরিকেই কমলার সব চেয়ে ভাল ফলন হচ্ছে। তার পর তাকদা, বিজনবাড়ি, কালিম্পং-১ ও কালিম্পং-২, গরুবাথান ব্লকে ভাল ফলন হচ্ছে। দার্জিলিং এবং কালিম্পং জেলার জিটিএ এলাকায় মোট ২ হাজার একর জমিতে কমলার ফলন হয়। অতীতে কমলার ফলন ভাল হত। গুণমানও ছিল উৎকৃষ্ট। ষাটের দশকের মাঝামাঝি থেকে ফলন ধীরে ধীরে নষ্ট হতে শুরু করে। পদ্ধতি না মেনে চাষের প্রবণতা বাড়তে থাকায় মানও খারাপ হতে থাকে। কিন্তু এই বছর সেই ছবিটা বদলে গিয়েছে। জিটিএ এলাকায় দার্জিলিং এবং কালিম্পং জেলার দায়িত্বে থাকা উদ্যানপালন আধিকারিক সত্যপ্রকাশ সিংহ বলেন, ‘‘এ বছর কমলার ফলন ভাল হয়েছে। মানও ভাল। তার উপর করোনা পরিস্থিতিতে চাহিদাও তুঙ্গে। দামও কিছুটা বেশি।’’ কিন্তু তাঁর কথায়, চাষি ভাল দাম পায়নি।
কালিম্পংয়ের ভালুখোপ এলাকার কমলা চাষি অর্জুন রাই বলেন, ‘‘আমরা কমলা পিছু ৩-৫ টাকা দাম পাচ্ছি এ বছর। বাগানে এসে গাছ ধরে কিনে নেন ব্যবসায়ীরা। তাঁরা সেগুলি সমতলে বেশি দামে বেচেন।’’ যোগেন্দ্র খরকা-র মতো কয়েক জন চাষি জানান, বাগান থেকে যারা কিনে নিয়ে যায়, তারা লাভ বেশি করছে। শিলিগুড়ি নিয়ন্ত্রিত বাজারে সরাসরি চাষিরা গেলে আড়তদাররা নানা রকম ভাবে নাজেহাল করে। চাষিদের অনেকেই জানান, পাহাড় থেকে কমলা কলকাতা, অসমের বাজারেও গিয়েছে এ বারে।