বাম ও কংগ্রেস বিধায়কদের ওয়াক আউট।—নিজস্ব চিত্র।
রাজ্য সরকারের করোনা মোকাবিলার পদক্ষেপ নিয়ে বিধানসভায় আলোচনার অনুমতি না পাওয়ায় ওয়াক-আউট করল বিরোধী বাম ও কংগ্রেস। পরে অবশ্য তারা আবার অধিবেশনে ফিরে যায়। করোনা-সতর্কতায় দু’দিন হয়েই মঙ্গলবার মুলতুবি হয়ে গেল বিধানসভা অধিবেশন। এই অধিবেশনে সরকারের বিভিন্ন দফতরের বাজেট আলোচনা করে পাশ করানোর কথা ছিল। কিন্তু অধিবেশন মুলতুবি হয়ে যাওয়ায় সময়ের অভাবে আলোচনা না করেই গিলোটিনে চলে গেল স্বরাষ্ট্র-সহ ৫৫টি দফতরের বাজেট। এ বারের অধিবেশনে আলোচনা হয়েছে একমাত্র শিক্ষা বাজেট।
অধিবেশনের শুরুতেই এ দিন কংগ্রেসের সচেতক মনোজ চক্রবর্তী এবং বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে রাজ্য সরকার কী পদক্ষেপ করছে, তা নিয়ে অন্তত এক ঘণ্টা আলোচনা হোক। স্বাস্থ্যমন্ত্রী এখানে আছেন। নয়তো মুখ্যমন্ত্রী এসে এ বিষয়ে বলুন।’’ স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য ওই আলোচনায় অনুমতি দেননি। হইচই শুরু করে দেন কংগ্রেস ও বাম বিধায়করা। এর মধ্যেই স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকে সভা ছেড়ে বেরোতে দেখে মনোজবাবু চিৎকার করে বলেন, ‘‘মন্ত্রী পালিয়ে যাচ্ছেন!’’ হইচইয়ের মধ্যেই স্পিকার বলেন, ‘‘আজ এ বিষয়ে আলোচনার সুযোগ নেই।’’ প্রতিবাদে ওয়াক আউট করে বিধানসভা চত্বরে অম্বেডকর মূর্তির নীচে কিছু ক্ষণ অবস্থানে বসেন বাম ও কংগ্রেস বিধায়কেরা।
পরে বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান বলেন, ‘‘ট্রেন-বাস চলছে। খেটে খাওয়া মানুষকে রোজই রাস্তায় বেরোতে হচ্ছে। সে জন্য বিধানসভায় করোনার সতর্কতা এবং অভিযোগ, প্রস্তাব সব কিছু নিয়েই আলোচনা করা যেত।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘সোমবার সর্বদল বৈঠকেই আমাদের দাবি জানিয়েছিলাম। অথচ পরিষদীয়মন্ত্রী বলেছেন, বৈঠকে আমরা সব মেনে নিয়ে বাইরে এসে আপত্তি জানিয়েছি। এ রকম মিথ্যাচার করলে এর পর থেকে বৈঠকে যাব কি না বা গেলে তার ভিডিয়ো রেকর্ডিং করতে হবে কি না, ভাবতে হবে!’’ পরিষদীয় প্রতিমন্ত্রী তাপস রায় অবশ্য বলেন, ‘‘সর্বদল বৈঠকে ভিড় এড়ানোর বিষয়ে সতর্ক থাকার বিরোধিতা কেউ করেননি। আর ভিড় এড়ানো আর বিধানসভায় চালিয়ে যাওয়া— দুটো একসঙ্গে হতে পারে না!’’ সুজনবাবু বলেন, ‘‘সরকারি হাসপাতাল থেকে সাধারণ মানুষকে মাস্ক, স্যানিটাইজার ইত্যাদি দেওয়ার দাবি করা, আতঙ্কিত হওয়ার বদলে সতর্ক হওয়া— এ সব বিধানসভা ছাড়া কোথায় বলব?’’