ফাইল চিত্র।
রাজ্য বাজেটের রেশ টেনে রাজ্যের ঋণের পদ্ধতি এবং বিলগ্নিকরণের পদক্ষেপ নিয়ে বিধানসভায় সরব হল বিরোধীরা। শাসক পক্ষ অবশ্য জানিয়েছে, পূর্বতন সরকারের রেখে যাওয়া ঋণের দায় মেটানো এবং উন্নয়নের কর্মসূচি চালানো— এই দুইয়ের মধ্যে ভারসাম্য রেখে চলতে হচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে। তবে ঋণ বা বিলগ্নিকরণ নিয়ে প্রশ্ন তুললেও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী শুক্রবার বিধানসভায় দাঁড়িয়ে বলেছেন, শুধু বিরোধিতার জন্যই বিরোধিতা করতে তাঁরা আসেননি। গঠনমূলক সমালোচনাই তাঁরা করতে চান। বিরোধীদের এই মনোভাবকে ‘ইতিবাচক’ বলে স্বাগত জানিয়েছেন পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
বিধানসভায় বাজেট-বিতর্ক শেষ হয়ে গিয়েছে বৃহস্পতিবারই। অর্থবিল এবং অ্যাপ্রোপ্রিয়েশন বিল পাশ হয়েছে এ দিন। তার আগে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন, নারী ও শিশু উন্নয়ন এবং সমাজকল্যাণ দফতরের ব্যয়-বরাদ্দ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বাকি দফতরগুলির বাজেট-বিতর্ক পাঠানো হয়েছে গিলোটিনে। অর্থবিলের উপরে বিতর্কে অংশগ্রহণ করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু বলেন, রাজ্যের কোষাগারে গুরুতর ঘাটতি আছে বলেই রাজস্ব আদায়ের উপরে তাদের জোর দিতে হচ্ছে। ঋণের বোঝা গত ১০ বছরে আরও বেড়েছে। এই ‘বাধ্যবাধকতা’ আছে বলেই কার্যত লকডাউনের মধ্যে লোকাল ট্রেন বন্ধ রাখলেও মদের দোকান খুলে রাখতে হয়। এই সূত্রেই শুভেন্দু দাবি করেন, রাজ্য সমবায় ব্যাঙ্ক থেকেও দু’হাজার কোটি টাকা ঋণ করেছিল রাজ্য সরকার। নাবার্ড এবং কেন্দ্রীয় সমবায়ের সম্মতি ছাড়া এটা করা যায় না। বিরোধী দলনেতা বলেন, রাজ্য সরকার এই পদক্ষেপ সংশোধন করে নেবে বলে তাঁদের আশা।
জবাবি ভাষণে পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থবাবু জানান, দু’হাজার কোটি টাকা সমবায় ব্যাঙ্ক থেকে নেওয়া হয়েছিল। আবার ২০২০-২১ সালে তা সমবায়ে শোধ করেও দেওয়া হয়েছে। পার্থবাবুর বক্তব্য, ‘‘এক দিকে ঋণ শোধ করব, অন্য দিকে উন্নয়ন করব— এটা খুব কঠিন কাজ। এটা বেড়েই চলেছে। যেখানে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব বলে আপনাদের মনে হচ্ছে, আমাদের জানাবেন। আমরা দেখব।’’
বাজেট প্রসঙ্গে এবং বাইরেও বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিক্রি করে দেওয়ার জন্যে কেন্দ্রীয় সরকারকে বারেবারেই আক্রমণ করেছে শাসক পক্ষ তথা তৃণমূল। বিরোধী দলনেতা এ দিন পাল্টা বলেছেন, মেট্রো ডেয়ারির শেয়ার বেসরকারি হাতে দিয়েছে রাজ্য সরকারই, তা নিয়ে মামলাও হয়েছে। এইচপিএল-এর শেয়ার চ্যাটার্জি গোষ্ঠীর কাছে বিক্রি করা হয়েছে। দুর্গাপুরের একটি সরকারি কারখানার জমি বিক্রি করার জন্য বৈঠক করেছেন এক মন্ত্রী। শুভেন্দুর প্রশ্ন, ‘‘কাচের ঘরে বসে ঢিল ছুড়ে লাভ কী?’’ মন্ত্রী অবশ্য বিলগ্নিকরণের প্রসঙ্গে যাননি।