ব্রাত্য বসু। —ফাইল চিত্র।
নিয়োগ ঘিরে জটিলতার মাঝেই রবিবার রাজ্যে ছিল টেট পরীক্ষা। কিন্তু সেই পরীক্ষা ঘিরেও বেধে গেল রাজনৈতিক তরজা। পরীক্ষা শেষের আগেই সমাজমধ্যমে প্রশ্নপত্র বেরিয়ে যাওয়ার অভিযোগ নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধী দলগুলো। জবাবে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর বক্তব্য, পরীক্ষা নির্বিঘ্নে হয়েছে। তবু যখন অভিযোগ উঠেছে, পর্ষদের কাছে বিষয়টি নিয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে।
টেট পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ‘ফাঁসে’র অভিযোগ সামনে আসতেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী শাসক দল তৃণমূল কংগ্রসেকে আক্রমণ করেছেন। তাঁর দাবি, টেটের প্রশ্নপত্র বাজারে বিক্রি হয়েছে। তৃণমূল নেতাদের আত্মীয়, নিকট জনেরা সেই প্রশ্ন কিনেছেন। যতই পরীক্ষা হোক, চাকরি হবে না! প্রশ্ন ‘ফাঁসে’র রেশ টেনেই সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম এ দিন হুগলির হরিপালে বলেছেন, ‘‘টাকার বিনিময়ে চাকরি হয়, টাকার বিনিময়ে প্রশ্নপত্র বিলি হয়, টাকার বিনিময়ে তালিকা ঠিক হয়, যেটা হাই কোর্টে প্রতিদিন বেরোচ্ছে। সেখানে যা বেরিয়েছে, তাতে কাকুর কণ্ঠস্বর যাতে ধরা না পড়ে এবং মমতা ও তার ভাইপোর নাম না বার হয়, তার জন্য নানা তামাশা চলছে।’’ সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর অভিযোগ, ‘‘এই সরকার একটা পরীক্ষাও স্বচ্ছতার সঙ্গে নিতে পারল না!’’ দুর্গাপুরে সিটু অনুমোদিত হিন্দুস্তান স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের একটি কর্মসূচিতে গিয়ে সুষ্ঠু পরীক্ষা ও নিয়োগের দাবিতে সরব হয়েছেন আইএসএফের চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকীও। তাঁর দাবি, ‘‘গত বছর যাঁরা টেট দিয়েছিলেন, তাঁদের দ্রুত ফলাফল বার হোক। এ বছরও দ্রুত ফলাফল বার করা হোক। তবে তৃণমূল যত দিন ক্ষমতায় থাকবে, স্বচ্ছ নিয়োগ হবে না। এই দল আপাদমস্তক দুর্নীতিতে ভরা!”
প্রশ্ন ‘ফাঁসে’র অভিযোগ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য অবশ্য বলেছেন, ‘‘পর্ষদের কাছে বিযয়টি নিয়ে জানতে চেয়েছি। পর্ষদ জানিয়েছে, পরীক্ষা শেষ হয়েছে আড়াইটেয়। কয়েক জন আগে বেরিয়েছে। আধ ঘণ্টা আগে ‘লিক’ করেছে। যাঁরা ভিতরে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন, তাঁরা জানতে পারেননি। কেউ একটু আগে বেরিয়ে গিয়ে মজা করার জন্য বা অন্য উদ্দেশ্যে এটা করেছেন।” তবে পরীক্ষা বাতিলের সম্ভবনা উড়িয়ে তাঁর দাবি, ‘‘নির্বিঘ্নে, সুষ্ঠু পরীক্ষা হয়েছে। কেন বাতিল হবে?’’ নিয়োগ নিয়ে তাঁর আশ্বাস, ‘‘আশা করছি, দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যাবে। দ্রুত ২০২২ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়াও সেরে ফেলা যাবে।’’