বাজেট আলোচনায় সিঙ্গুরই ছিল বিরোধীদের ‘অস্ত্র’, শাসকের ‘সার্টিফিকেট’। ফাইল চিত্র।
দেড় দশক পরেও রাজ্যের শিল্পচর্চায় একই রকম প্রাসঙ্গিক থাকল সিঙ্গুরে টাটা গোষ্ঠীর প্রস্তাবিত কারখানা। শনিবার শিল্প-বাণিজ্য দফতরের বাজেট আলোচনায় সিঙ্গুরই ছিল বিরোধীদের ‘অস্ত্র’, শাসকের ‘সার্টিফিকেট’।
২০০৬ সালে ক্ষমতায় আসার পরে সপ্তম বামফ্রন্ট সরকার সিঙ্গুরে টাটা গোষ্ঠীর গাড়ি কারখানা করতে উদ্যোগী হয়েছিল। জমি অধিগ্রহণ নিয়ে প্রশ্ন তুলে তৎকালীন বিরোধী নেত্রীর আপত্তিতে তা আর শেষ পর্যন্ত হয়নি। এ দিন রাজ্যের শিল্প ও বাণিজ্য দফতরের বাজেট আলোচনায় সেই প্রসঙ্গ আবারও ফিরিয়ে আনলেন বিরোধীরা। বিজেপির পরিষদীয় দলের সচেতক মনোজ টিগ্গা এ বিষয়ে মন্তব্য করেন, ‘‘সিঙ্গুরে টাটার কারখানা ফিরিয়ে দিয়েই এ রাজ্যে তৃণমূল সরকার যাত্রা শুরু করেছিল। তার পর আর এ রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রীকে কোনও শিল্প প্রতিষ্ঠানের ফিতে কাটতে দেখিনি।’’ শিল্প নিয়ে শাসক ও বিরোধী বছরভর তরজা চললেও গুরুত্বপূর্ণ এই বাজেট বিতর্কে এ দিন মুখ্যমন্ত্রী বা বিরোধী দলনেতার কেউ-ই উপস্থিত ছিলেন না।
বিরোধীদের আক্রমণের মুখে সিঙ্গুরের জবাব দিতে টাটা গোষ্ঠীকে সামনে রেখেছেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী শশী পাঁজা। তিনি বলেন, ‘‘সাম্প্রতিক অতীতে রাজ্যে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিনিয়োগ করেছে টাটা গোষ্ঠী। সিঙ্গুরের কাছেই ছোট ও মাঝারি শিল্পের একটি পার্ক তৈরি হচ্ছে।’’ সেই সঙ্গেই মন্ত্রী পাল্টা খোঁচা দিয়ে বলেন, ‘‘যে গাড়ির কারখানা সরে গিয়েছে বলে আপনাদের এত দুঃখ, তার উৎপাদনও কিন্তু বন্ধ গিয়েছে!’’ তাঁর আরও মন্তব্য, ‘‘আপনারা একটু প্রধানমন্ত্রীর গৃহীত ‘বেচো ইন্ডিয়া বেচো’ নীতির দিকে তাকিয়ে দেখুন।’’
তৃণমূল সরকারের জমি-নীতিই রাজ্যে শিল্পায়নের পথে বাধা বলে অভিযোগ করেন বিজেপি বিধায়ক অম্বিকা রায়। তাঁর কথায়, ‘‘জমি অধিগ্রহণে যে বরাদ্দ রয়েছে তাতে প্রয়োজনীয় জমি পাওয়া হবে না।’’ রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা শিল্পে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে উপযুক্ত নয় বলে মন্তব্য করেন বিজেপির শঙ্কর ঘোষ।
এর জবাবে রাজ্যে শিল্পক্ষেত্রে সাফল্য দাবি করে তৃণমূল বিধায়ক মলয় মজুমদার বলেন, ‘‘শিল্পশুধু রাজ্যের দায়িত্ব নয়। এ রাজ্যে একাধিক বড় বড় শিল্প বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।’’
ডেউচা পাঁচামি প্রকল্প নিয়ে সরকারকে খোঁচা দিয়ে মনোজ এ দিন বলেন, ‘‘কী হচ্ছে ওখানে? কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।’’ এই মন্তব্যের জবাবে বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বিরোধীদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘কবে যাবেন, বলুন। দেখে আসবেন কী হচ্ছে।’’