মানিক ভট্টাচার্য। ফাইল চিত্র।
শিক্ষায় নিয়োগ-দুর্নীতির অভিযোগে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান মানিক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে আগেই সরব ছিল বিরোধীরা। শেষ পর্যন্ত ইডি-র হাতে তিনি গ্রেফতার হওয়ায় তারা আরও সুর চড়িয়েছে। শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস অবশ্য বলছে, কেন্দ্রীয় সংস্থা তদন্ত করুক। কিন্তু তদন্তের নামে বিজেপি-সহ বিরোধীদের রাজনৈতিক লক্ষ্যপূরণে তারা যেন হাতিয়ার না হয়ে ওঠে।
বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ মঙ্গলবার বলেছেন, ‘‘শিক্ষা ক্ষেত্রে যে দুর্নীতি হয়েছে, মানিকবাবু তার মধ্যমণি! তিনি জানতেন, তিনি অপরাধ করেছেন। তাই পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন। সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছিলেন। ইডি-র মুখোমুখি হতেই জেরায় সব বেরিয়ে এসেছে। উনি ধরা পড়েছেন। এ বার বিচারে কী হয়, দেখা যাক।’’ সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর অভিযোগ, চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে ছেলে-মেয়েদের কাছ থেকে টাকা তোলা হয়েছে। তার পরে বেআইনি কাজ আড়াল করতে আইনজীবী এবং আইনি লড়াইয়ের জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করা হয়েছে। সুজনবাবুর বক্তব্য, ‘‘বড্ড দেরি হয়ে গেল এই গ্রেফতারে। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যান থাকতে থাকতেই বিধানসভা ভোটে দাঁড়ালেন, হেরে গিয়েও চেয়ারম্যান থাকলেন। পরের বার জিতে বিধায়ক হলেন, তখনও চেয়ারম্যান। বোঝা যাচ্ছে, ‘অনুপ্রেরণা’ কত প্রবল! নিয়োগের নামে টাকা তুলে ঘাটে ঘাটে পাঠাতেন, নিজেও নিশ্চয়ই রেখেছেন! এমন ব্যক্তি সমাজ জীবনের কলঙ্ক! এঁদের সারা জীবন জেলে থাকা উচিত!’’ তবে এ সবের মাঝে যোগ্য চাকরি-প্রার্থীদের নিয়োগ প্রক্রিয়া যাতে আর বিলম্ব না হয়, সেই দাবিও ফের উল্লেখ করেছে সিপিএম। ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের (আইএসএফ) চেয়ারম্যান ও বিধায়ক নওসাদউদ্দিন সিদ্দিকীর বক্তব্য, ‘‘রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী, এসএসসি-র প্রাক্তন সভাপতি ও সচিব, মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা পর্যদের প্রাক্তন সভাপতি সবাই গ্রেফতার হয়েছেন দুর্নীতির অভিযোগে! রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাটাকেই কি ধ্বংস করে দিতে চাইছে তৃণমূল সরকার? এখন শুধু কান ধরে টানাটানি হচ্ছে, শিক্ষা ব্যবস্থাকে এতটা দুর্নীতির মধ্যে নিমজ্জিত করার মাথাটাও খুঁজে বার করে জনসমক্ষে আনা দরকার।’’
রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ অবশ্য এ দিন বলেছেন, ‘‘আমরা চাই, কেন্দ্রীয় সংস্থা নিরপেক্ষ তদন্ত করবে। তদন্তের নামে কোনও ভাবে বিজেপির রাজনৈতিক লক্ষ্যপূরণে সাহায্য করা যেন না হয়। তাতে দোষীরা শাস্তি পাক।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘সেই সঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রী যে ভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে চাইছেন, তাতে যেন কোনও বাধা তৈরি না হয়। সেটা যেন এগিয়ে যেতে পারে।’’