ED attacked in Sandeshkhali

দু’জনকে ধরেই ক্ষান্ত পুলিশ? প্রশ্ন নানা মহলে

কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর থেকে শুরু করে বিজেপির বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক সুকল্যাণ বৈদ্য, সকলেই পুলিশকে দুষেছেন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৪ ০৫:৩৩
Share:

তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহান। —ফাইল চিত্র।

‘চুনোপুঁটি’ নয়, ‘রাঘব বোয়াল’ ধরা পড়ুক— দাবি তুলছেন বিরোধীরা। যদিও সন্দেশখালি-কাণ্ডের পরে ন’দিন কেটে গেলেও এখনও পুলিশ নাগাল পেল না ইডি আধিকারিক ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপরে হামলায় মূল অভিযুক্ত, তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের। শুক্রবার ভোরে সন্দেশখালির গ্রাম থেকে দু’জন ধরা পড়লেও তারা নেহাতই নগণ্য বলে দাবি বিরোধীদের। শাহজাহানকে পুলিশই আড়াল করে রেখেছে বলে অভিযোগ
তুলছেন তাঁরা।

Advertisement

কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর থেকে শুরু করে বিজেপির বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক সুকল্যাণ বৈদ্য, সকলেই পুলিশকে দুষেছেন। শান্তনুর দাবি, পুলিশের সাহায্যে মায়ানমার পালিয়েছেন শাহজাহান। সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আহমেদ আলি খান আবার বলেন, ‘‘পুলিশই শাহজাহানকে গোপন ডেরায় পাহারা দিয়ে রেখেছে।’’ বৃহস্পতিবার রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের সঙ্গে রাজভবনে গিয়ে দেখা করেন রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং স্বরাষ্ট্রসচিব। ওই সাক্ষাতের পরে শুক্রবার রাজ্যপাল জানিয়েছিলেন, শাহজাহানকে ধরতে দেরি হচ্ছে কেন, তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকেরা। তদন্তের স্বার্থে তা নিয়ে মন্তব্য করছেন না তিনি। কিন্তু তার পরেও তিন দিন কেটে গেল, শাহজাহান অধরাই।

এই নিয়ে জানতে চেয়ে শনিবারও ফোন করা হয়েছিল বসিরহাট পুলিশ জেলার সুপার জ়বি থমাস কে-কে। তিনি যথারীতি ফোন ধরেননি। মেসেজের উত্তর দেননি।

Advertisement

এ দিকে, ধৃত মেহবুর মোল্লা ও সুকোমল সর্দারের পরিবারের দাবি, তাঁদের ফাঁসানো হয়েছে। ৫ জানুয়ারি, শুক্রবার ইডি-র উপরে হামলার সময়ে তাঁরা বাড়িতেই ছিলেন। পুলিশ অবশ্য জানাচ্ছে, ঘটনার ভিডিয়ো ফুটেজ দেখে দু’জনকে চিহ্নিত করে তবেই গ্রেফতার করা হয়েছে। দু’জনকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করে শাহজাহান সম্পর্কে বেশ কিছু নতুন তথ্য পাওয়া গিয়েছে বলেও দাবি বসিরহাট জেলা পুলিশের একটি সূত্রের। হামলার ঘটনায় কারা ইন্ধন দিয়েছিল, ইডি অফিসারেরা গ্রামে পৌঁছনোর ঘণ্টাখানেকের মধ্যে কয়েকশো লোক কোথা থেকে জড়ো হল, তাদের কে কী নির্দেশ দিয়েছিল— তা নিয়ে কিছু নতুন তথ্য পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি পুলিশের।

রেশন দুর্নীতির তদন্তে ৫ জানুয়ারি উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালির গ্রামে গিয়েছিলেন ইডি আধিকারিকেরা। জেলা পরিষদ সদস্য শেখ শাহজাহানের দলবল তাঁদের উপরে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। আক্রান্ত হন সিআরপিএফ জওয়ানেরাও। বাদ পড়েনি সংবাদমাধ্যম। ঘটনার পর থেকে স্থানীয় কিছু তৃণমূল নেতা দাবি করেছিলেন, এলাকাতেই আছেন শাহজাহান। নানা সূত্রে খবর আসছিল, সন্দেশখালি লাগোয়া দক্ষিণ ২৪ পরগনায় সাঙ্গোপাঙ্গদের নিয়ে আত্মগোপন করেছেন শাহজাহান। তার পরেও অবশ্য শাহজাহানের নাগাদ পায়নি পুলিশ।

তৃণমূলের বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার নেতা তথা হাড়োয়ার বিধায়ক হাজি নুরুল ইসলাম শুক্রবার এবিপি আনন্দে দাবি করেছিলেন, ‘‘শাহজাহানকে যখন দলে নেওয়া হয়, তখন তিনি-সহ অনেকেই বিরোধিতা করেছিলেন। মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের হাত ধরেই শাহজাহান তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন।’’ শনিবার হাজি নুরুলের বাড়িতে গেলে তিনি দেখা করেননি। ছেলে রবিউলকে পাঠিয়ে জানিয়ে দেন, দলের নির্দেশে তিনি শাহজাহান নিয়ে আর কোনও মন্তব্য করবেন না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement