‘জরুরি পরিষেবা চালু রেখে বাকি দফতরে তালা দিন’, ডিএ আন্দোলনে কর্মীদের পরামর্শ শুভেন্দুর।
এ বার বকেয়া মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) নিয়ে আন্দোলনরত সরকারি কর্মীদের দফতরে তালা ঝোলানোর পরামর্শ দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তবে স্বাস্থ্য, শিক্ষার মতো জরুরি পরিষেবামূলক ক্ষেত্রকে এর বাইরে রেখেছেন তিনি। সোমবার কলকাতায় অম্বেডকর মূর্তির পাদদেশে জমায়েত করেন বিজেপি বিধায়করা। তাঁদের হাতে থাকা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ডে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া ডিএ মিটিয়ে দেওয়ার দাবি জানানো হয়। বকেয়া ডিএর দাবিতে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ-সহ ৩২টি সংগঠন সোম এবং মঙ্গলবার যে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে, তাতে সংহতি জানান বিজেপি বিধায়করা।
রাজ্যের তরফে রবিবার জানানো হয়েছিল, কেন্দ্র বিভিন্ন প্রকল্পে টাকা আটকে রাখায় কর্মচারীদের চাহিদামতো ডিএ মেটানো সম্ভব নয়। এ বিষয়ে শুভেন্দুকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, বিজেপিশাসিত বহু রাজ্য কেন্দ্রের চেয়েও বেশি হারে কর্মচারীদের ডিএ দিচ্ছে। এই প্রসঙ্গে তিনি উত্তরপ্রদেশ সরকারের উদাহরণ টানেন। সরকার কর্মীদের ‘ন্যায্য পাওনা’ থেকে বঞ্চিত করে বিষয়টি নিয়ে ‘রাজনীতি’ করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। বাজেট বক্তৃতার শেষ লগ্নে যে ভাবে চিরকূটের মাধ্যমে ৩ শতাংশ ডিএ বাড়ানোর ঘোষণা করা হয়েছে, তা নিয়েও কটাক্ষ করেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক। বিধানসভায় মূল যে নথি দেখে বাজেট ঘোষণা করছিলেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, তাতে ডিএ বৃদ্ধির উল্লেখ ছিল না। পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের হাতে একটি চিরকূট দেন। সেই চিরকূট চন্দ্রিমার হাতে দেন অরূপ। তারপরই ৩ শতাংশ ডিএ বাড়ানোর কথা ঘোষণা করেন অর্থমন্ত্রী।
অপর দিকে বকেয়া ডিএ দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার কর্মবিরতি চলছে রাজ্যের সরকারি অফিসে। সোমবার সকাল থেকেই কর্মবিরতির প্রভাব পড়েছে কোথাও কোথাও। আবার কোথাও কর্মবিরতির কোনও প্রভাবই পড়েনি বলে দাবি করেছে সরকারপক্ষ। মধ্যশিক্ষা পর্ষদে কর্মবিরতির প্রভাব পড়েনি বলে দাবি করা হয়েছে। অন্য দিকে, মহাকরণে অনেক কর্মীই কাজ করছেন না বলে জানিয়েছেন। সপ্তাহের প্রথম দিনে রাজ্য সরকারি অফিসের ছবিটা এ রকমই।
কেন্দ্রীয় হারে রাজ্যের সরকারি কর্মীদের ডিএ দেওয়ার দাবি দীর্ঘ দিনের। এ নিয়ে মামলা-মোকদ্দমাও চলছে। আগামী ১৫ মার্চ ডিএ মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। তার আগে বকেয়া ডিএ-র দাবিতে আন্দোলনে শামিল হয়েছেন রাজ্য সরকারি কর্মীদের একাংশ। কলকাতার শহিদ মিনারে তাঁদের ধর্না-অবস্থান চলছে। গত ১১ দিন ধরে চলছে অনশনও। কয়েক জন অসুস্থও হয়ে পড়েছেন। এর মধ্যেই রাজ্য বাজেট পেশের সময় সরকারি কর্মীদের ৩ শতাংশ ডিএ ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু তাতে চিঁড়ে ভেজেনি। পুরো বকেয়া মেটানোর দাবিতে অনড় সরকারি কর্মীদের একাংশ। এই দাবিতে সোম এবং মঙ্গলবার রাজ্য সরকারি অফিসে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ-সহ ৩২টি সংগঠন। মঙ্গলবার এই কর্মবিরতিতে যোগ দেবে কো-অর্ডিনেশন কমিটি-সহ আরও কয়েকটি সংগঠন। মোট ৩৮টি সংগঠন এই কর্মবিরতিতে শামিল হবে।