(বাঁ দিকে) বিজেপির বিক্ষোভ। বামেদের বিক্ষোভ (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
সন্দেশখালি ঘিরে নানা দিকে অশান্তির মধ্যে দুই বিরোধী দল বিজেপি এবং সিপিএমের ষড়যন্ত্র দেখছে তৃণমূল। শাসকদলের বক্তব্য, সন্দেশখালি শান্ত হয়ে গিয়েছিল। সেখানে নতুন করে গণ্ডগোল পাকিয়ে এখন অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা করছে বিরোধীরা। মঙ্গলবার সন্দেশখালিতে বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কর্মসূচি ঘিরে ধুন্ধুমার বেধেছে। এক দিকে পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙা, পুলিশের দিকে পাথর ছোড়ার ঘটনায় দফায় দফায় তপ্ত হয় বসিরহাট। অন্য দিকে সন্দেশখালি নিয়ে রাজ্যের জেলায় জেলায় বামেদের কর্মসূচিতেও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে একাধিক জেলায়।
রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘‘স্মৃতি ইরানির উস্কানিতে বিজেপি গণ্ডগোল পাকাচ্ছে। ওদের উদ্দেশ্য অশান্তি জিইয়ে রাখা। বিজেপির লোকজন এমন পাথর ছুড়েছে যে সাধারণ মহিলারাও আক্রন্ত হয়েছেন। এরা আবার মা-বোনেদের সুরক্ষা নিয়ে বড় বড় কথা বলছে।’’
তৃণমূল মুখাপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘সন্দেশখালির দু’একটি এলাকায় বিজেপি ও সিপিএম অশান্তি করছে। পুলিশ ওখানে সংযত থেকে ভূমিকা পালন করছে। সিপিএম ভুলে যাচ্ছে নিজেদের জমানার কথা। যখন পু্লিশ ছিল ‘ট্রিগার হ্যাপি’। আর সুকান্ত মদুমদারেরা যেন খেয়াল রাখেন তাঁদের শাসনের রাজ্যগুলিতে মহিলাদের কী অবস্থা।’’
সন্দেশখালিতে শুক্রবার রাত থেকে প্রশাসনের জারি করা ১৪৪ ধারা মঙ্গলবার বাতিল করে দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। সে প্রসঙ্গে বিধানসভায় তৃণমূলের উপমুখ্য সচেতক তাপস রায় বলেন, ‘‘ভয়াবহ পরিস্থিতি চলছে সন্দেশখালিতে। সেখানে স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশের ভূমিকা রয়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে যদি ন্যায়ালয় থেকে পুলিশ প্রশাসনের উপর এ ভাবে নির্দেশ যায়, তা হলে সমস্যা হতে পারে। সেই সমস্যা যাতে না হয়, তাই সব প্রচেষ্টা মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী চালাচ্ছেন। সকলেই সন্দেশখালি নিয়ে চিন্তিত। সেখানে যাতে আর কোনও প্ররোচনা, উস্কানি না-ঘটে, আমাদের সকলের উচিত তা নিশ্চিত করা।’’
সোমবার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে সড়কপথে সন্দেশখালি যাওয়ার চেষ্টা করেছিল বিজেপি পরিষদীয় দল। তাঁদের বাসন্তী হাইওয়েতে আটকে দিয়েছিল পুলিশ। তার থেকে ‘শিক্ষা নিয়ে’ মঙ্গলবার ট্রেনে করে বসিরহাট যান সুকান্তেরা। বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়। তার পর বিকেল সাড়ে ৩টে নাগাদ সেখানে অবস্থানে বসে যান সুকান্ত।
মঙ্গলবার সন্দেশখালি গিয়েছিল তৃণমূলের প্রতিনিধিদলও। কালীনগরে পৌঁছে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। তার পর সেচমন্ত্রী তথা নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক বলেন, ‘‘মা, বোনেরাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতীক। এটা উত্তরপ্রদেশ নয়। যেখানে ধর্ষণ করে নির্যাতিতাকে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এটা বাংলা, এখানে মায়েদের সম্মান নষ্ট হয় না।’’ কালীনগরে দাঁড়িয়েই পার্থের ঘোষণা, তৃণমূলের নেতারা যাঁদের ভেড়ির টাকা আটকে রেখেছেন, তাঁদের টাকা ফেরানোর ব্যবস্থা করা হবে দলের উদ্যোগে।
আগামী ১৮ ফেব্রেুয়ারি সন্দেশখালিতে সভা করার ডাক দিয়েছে তৃণমূল। সেখানে উত্তর ২৪ পরগনার তৃণমূল নেতাদের থাকার কথা।