অভিযুক্ত তরুণী ইচ্ছা সিন্হা দাসের দাবি, তিনি কোনও ভাবেই প্রতারণায় জড়িত নন। —নিজস্ব চিত্র।
কখনও নিজের পরিচয় দিয়েছেন, আইপিএস অফিসার বলে। আবার কখনও জানিয়েছেন, তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিজ়িটিং প্রফেসর। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা হিসাবে নিজের পরিচয় দিয়ে সেখানে চাকরির প্রতিশ্রুতিতে ৬ লক্ষ টাকার প্রতারণা করেছেন। সংবাদমাধ্যমের এক কর্মীর এই অভিযোগের ভিত্তিতে এক বিধবা তরুণীকে গ্রেফতার করল নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশ। শনিবার অভিযুক্ত তরুণীকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে তারা। যদিও অভিযুক্ত তরুণীর দাবি, তিনি কোনও ভাবেই প্রতারণায় জড়িত নন।
পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতের নাম ইচ্ছা সিন্হা দাস। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক সংবাদমাধ্যমের এক কর্মীর অভিযোগ, তাঁকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পারচেজ় ম্যানেজার পদে চাকরি দেওয়ার প্রস্তাব দেন ইচ্ছা৷ সে জন্য দফায় দফায় মোটা অঙ্কের অর্থ নিয়েছেন। যদিও সে চাকরি হয়নি। এর পর নরেন্দ্রপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি৷ এই অভিযোগের তদন্তে নেমে শনিবার ইচ্ছাকে গ্রেফতার করে নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ইচ্ছার প্রয়াত স্বামী পুলিশ অফিসার ছিলেন৷ ২০১৯ সালে এক পথদুর্ঘটনায় সোনারপুরে মারা যান তিনি৷
পুলিশ জানিয়েছে, ইচ্ছার বিরুদ্ধে এর আগে মদের লাইসেন্স পাইয়ে দেওয়ার নাম করে লক্ষাধিক টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। এমনকি, সরকারি নথি জাল করার অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতারও করেছিল সোনারপুর থানার পুলিশ৷ ওই মামলায় জেল হেফাজতে ছিলেন তিনি৷ তাঁর বিরুদ্ধে নতুন করে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। যদিও সমস্ত অভিযোগই অস্বীকার করেছেন ইচ্ছা। তাঁর বিরুদ্ধে বার বার জালিয়াতির অভিযোগ কেন উঠছে? আনন্দবাজার অনলাইনের এই প্রশ্নের জবাবে তাঁর দাবি, ‘‘আমি কোনও সরকারি নথি জাল করিনি। এর কী প্রমাণ রয়েছে? আইপিএস বলে কেনই বা নিজেকে পরিচয় দেব? ইন্টারনেটেই তো আইপিএসদের নামের তালিকা পাওয়া যায়!’’
পুলিশ সূত্রে খবর, ইচ্ছার বিরুদ্ধে চাকরি দেওয়ার নাম করে জালিয়াতির অভিযোগে নরেন্দ্রপুর থানায় নালিশ জানানো হলে ঘটনার তদন্ত শুরু করেন পুলিশ আধিকারিকেরা৷ এর পর অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বারুইপুর মহকুমা আদালতে আবেদন জানানো হয়৷ শনিবার সেই আবেদন মঞ্জুর করেছে আদালত৷ তাঁকে বারুইপুর আদালতে হাজির করানো হলে ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক৷ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪২০, ৪০৬ এবং ৪৭১ ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ৷ এই বিষয়ে বারুইপুর পুলিশ জেলার ডিএসপি মোহিত মোল্লা বলেন, ‘‘এই অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশ৷’’