Firhad Hakim

‘ইন্দ্রনীল যদি মুখ্যমন্ত্রীর কানে লাগিয়ে দেয়!’ পাশে দাঁড়িয়ে রসিকতা মমতার বকুনি খাওয়া ফিরহাদের

পুরসভা ছাড়া অন্য বিষয়ে মুখ খোলার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ‘বকুনি’ খেয়েছিলেন। শনিবার রসিকতা করে বলেন, ইন্দ্রনীল সেনকে নিয়ে ভয়ে ভয়ে থাকেন তিনি।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২৩ ১৯:৫১
Share:
Indranil Sen, Mamata Banerjee and Firhad Hakim

ফিরহাদ বলেন , ‘‘ইন্দ্রনীল সেনের সোর্স বেশি। (মমতার কাছে) রিচও বেশি।’’ —ফাইল চিত্র।

সপ্তাহ দুই আগে কালীঘাটে শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকের পর রাজ্যের পুরমন্ত্রী তথা কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ (ববি) হাকিম বলেছিলেন, ‘‘কণ্ঠ আমার রুদ্ধ আজিকে।’’ কারণ, পুরসভা ছাড়া অন্য বিষয়ে মুখ খোলার জন্য শীর্ষবৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর বকুনি দিয়েছিলেন ফিরহাদকে। বলেছিলেন, পুরসভা ছাড়া পুরমন্ত্রী ফিরহাদ যেন অন্য কোনও বিষয়ে মুখ না খোলেন। খুলতে হলে যেন মমতার কাছ থেকে বিষয়টি (দলের বক্তব্য) জেনে নেন।

Advertisement

কণ্ঠ ‘রুদ্ধ’ বলার পরেও বাম আমলে চিরকুটে চাকরি নিয়ে ফিরহাদ তাঁর মন্ত্রিসভার সহকর্মী উদয়ন গুহ সম্পর্কে মুখ খুলেছিলেন। এবং সেই মন্তব্য ‘বন্ধুভাবাপন্ন’ ছিল না। যদিও পরদিনই ডিগবাজি খেয়ে তা শুধরে নেন পুরমন্ত্রী। তার পর থেকে তিনি মোটামুটি নীরবেই চিলেন। রেড রোডে মমতার ধর্না মঞ্চে তাঁকে দেখা গিয়েছে অনুগত সৈনিকের মতো নেত্রীর পাশে বসে থাকতে। কোনও কথা তিনি বলেননি।

কিন্তু শনিবার বললেন। হুগলির চন্দননগর জল প্রকল্পের উদ্বোধনে এসে বললেন, তাঁকে ‘ভয়ে ভয়ে’ থাকতে হয়। কারণ, মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেনের ‘রিচ’ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অনেক বেশি। রাজ্যের তথ্যসংস্কৃতি মন্ত্রী ইন্দ্রনীল তাঁর নামে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে কিছু বলে দিলেই বকুনি অবধারিত। ‘বন্ধু’ ইন্দ্রনীলের সামনে হাসতে হাসতেই ‘অভিযোগ’ করে বসলেন ফিরহাদ।

Advertisement

চন্দননগরের বিধায়ক ইন্দ্রনীল তখন মঞ্চে বসে আছেন। ফিরহাদ মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে বলছেন। হঠাৎই তিনি স্থানীয় বিধায়ককে নিয়ে বলতে শুরু করেন। ফিরহাদ বলেন , ‘‘ইন্দ্রনীল সেনের সোর্স বেশি। রিচও বেশি। ও একটা ফুড কমিটিতেও আছে। সাংস্কৃতিক বিষয়টা পুরোপুরি দেখে। সেই জন্য ওর রিচটা মুখ্যমন্ত্রী পর্যন্ত।’’ পুরমন্ত্রীর সংযোজন, ‘‘তাই আমাদেরও মাঝেমাঝে ভয়ে থাকতে হয়! ইন্দ্রনীল যদি আবার কানে লাগিয়ে দেয়। শুধু আমি নই, ইন্দ্রনীলকে সব দফতরই একটু প্রায়োরিটি (অগ্রাধিকার) দিয়ে থাকে।’’

ফিরহাদ যখন এ কথা বলছিলেন, তখন তাঁর পাশে বসে ইন্দ্রনীলকে মুচকি মুচকি হাসতে দেখা যায়। ফিরহাদ বলে চলেন, ‘‘সঙ্গীতকার তো! গান গাইতে গাইতে কি আবার গান গেয়ে দিল। আর আমি বকা খেলাম।’’ অবশ্য পর ক্ষণেই ইন্দ্রনীলের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘‘মানুষের জন্য কাজটা ইন্দ্রনীল করেই চলেছে।’’

মার্চ মাসে কালীঘাটে রাজ্যের সমস্ত বিধায়ক, জেলা সভাপতি এবং জেলা পরিষদের সভাধিপতিকে বৈঠকে ডেকেছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা। সেখানে ছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। সেই বৈঠকের মাঝেই ফিরহাদকে মমতা নির্দেশ দেন, যেন বাইরে (গণমাধ্যমের সামনে) সব বিষয়ে কথা না বলেন তিনি। পরে ফিরহাদকেও বলতে শোনা যায়, ‘‘অনলি কর্পোরেশন।’’ তার পরের শনিবার ‘টক টু মেয়র’ কর্মসূচিতে তাঁকে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করতেই ফিরহাদ বলেন, “কণ্ঠ আমার রুদ্ধ আজিকে বাঁশি সঙ্গীতহারা…।”

তাই শনিবার তাঁর চন্দননগরের মন্তব্য আলাদা ‘ব্যঞ্জনা’ তৈরি করেছে রাজ্য রাজনীতিতে। যদিও ইন্দ্রনীল নিজে তেমনটা মনে করেন না। মন্ত্রী বলেন, তাঁদের মধ্যে দারুণ সদ্ভাব। আনন্দবাজার অনলাইনকে ইন্দ্রনীল বলেন, ‘‘আমাদের মন্ত্রীদের মধ্যে খুব ভাল সম্পর্ক। আমরা একে অপরের সঙ্গে মজা করে থাকি। আর উনি তো আমার গানবাজনা নিয়ে বলেছেন। অন্য মানে খোঁজার মানে হয় না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement