ধৃত বিশাল এবং সুমন (বাঁ দিক থেকে)। নিজস্ব চিত্র
প্রথমে পরিষেবার ফিডব্যাক নেওয়ার নাম করে মহিলাদের ফোন নম্বর জোগাড়। তার পর ভাব জমানো। ভিডিয়ো কল করে তাঁদের বিভিন্ন মুহূর্তের ছবির স্ক্রিন শট জমিয়ে রাখা। তার পর সুযোগ বুঝে সেই ছবি দেখিয়ে ব্ল্যাকমেল করে একের পর এক মহিলাকে ধর্ষণ। এমন ফাঁদ পেতে অন্তত ৬৬ জন মহিলাকে ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠল অনলাইন বিপণির এক ডেলিভারি বয়ের বিরুদ্ধে। ঘটনায় যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, হুগলির ব্যান্ডেলের সেই দুই যুবককে শনিবার রাতে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার আদালতে তোলা হলে বিচারক দুই অভিযুক্তকে ৫ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
ব্যান্ডেলের কেওটার বাসিন্দা বিশাল বর্মা পেশায় একটি অনলাইন বিপণির ডেলিভারি বয়। তার বিরুদ্ধেই এমন চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিশাল পণ্য পৌঁছে দেওয়ার পর ফিডব্যাক নেওয়ার অছিলায় মহিলাদের ফোন নম্বর সংগ্রহ করত। তার পর নানা কৌশলে তাঁদের সঙ্গে বন্ধুত্ব তৈরি করত। এর পর বিভিন্ন সময়ে ভিডিয়ো কল করে নানা মুহূর্তের ছবির স্ক্রিনশট জমিয়ে রাখত। সুযোগ বুঝে সেই সব ছবি দেখিয়ে মহিলাদের ব্ল্যাকমেল করে ধর্ষণ করত বলে অভিযোগ। সম্প্রতি এই ঘটনা পুলিশ জানতে পারে চুঁচুড়ার এক গৃহবধূর অভিযোগের ভিত্তিতে। ওই মহিলার অভিযোগ, এমন ফাঁদে ফেলে বিশাল তাঁকেও ধর্ষণ করেছিল। সেই সঙ্গে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে তাঁর গয়নাও হাতিয়ে নেয়। ওই মহিলার আরও দাবি, বিশাল সেই সময় তাঁকে জানায়, যে তিনি তার ৬৬তম ‘শিকার’।
শনিবার রাতে চুঁচুড়া থানার আধিকারিক তীর্থসারথি হালদারের নেতৃত্বে একটি দল ব্যান্ডেলের কেওটার ত্রিকোণ পার্কে হানা দেয়। বিশালের বাড়িতে ঢুকে তাঁকে এক মহিলার সঙ্গে দেখতে পায় পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই মহিলাকেও বিশাল একই ভাবে ভয় দেখিয়ে শ্লীলতাহানি করেছে। বিশালের মোবাইল এবং তার কাছে থাকা বেশ কিছু মাইক্রোচিপে অসংখ্য মহিলার ছবি এবং ভিডিয়ো পেয়েছে পুলিশ। তবে অভিযুক্তের দাবি, সে যৌনকর্মীদেরও নিয়ে আসত। একটি ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, বিশাল আগ্নেয়াস্ত্র হাতে দাঁড়িয়ে এবং তার পায়ের কাছে হাতজোড় করে রয়েছেন এক মহিলা। যদিও বিশালের দাবি ওটা আসল আগ্নেয়াস্ত্র নয়।
বিশালের মোবাইলে পাওয়া ছবি দেখে সুমন মণ্ডল নামে তার এক সহোযোগীর সন্ধান পায় পুলিশ। সুমন পেশায় রং মিস্ত্রি। সে-ও কেওটারই বাসিন্দা। মাস চারেক আগে বিয়ে করেছে সুমন। সুমনের পরিবারের সদস্যদের অবশ্য দাবি, এ সব তাঁরা কিছুই জানতেন না। এ নিয়ে বিশালের ঘাড়েই দোষ চাপাচ্ছেন তাঁরা।