ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার দেশপ্রিয় পার্কে। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানেও ভয় দেখানোর রাজনীতির অভিযোগ তুলে সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘ধমকানি, চমকানি বা জেলের ভয় দেখাবেন না’ বলে তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী। ঘটনাচক্রে রবিবারই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরা নারুলাকে কয়লা কাণ্ডে নোটিস পাঠিয়েছে সিবিআই। তার কয়েক ঘণ্টা পরে মমতার এই বক্তব্য সেই নোটিসের দিকেই ইঙ্গিত বলেই মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের। যদিও সরাসরি নোটিসের বিষয়ে উল্লেখ করেননি মমতা। বাংলার প্রতি দীর্ঘদিনের বঞ্চনার অভিযোগও তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
রবিবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে দেশপ্রিয় পার্কে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই কেন্দ্র তথা বিজেপির দিকে ইঙ্গিত করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি শুনেছি, কখনও কখনও দিল্লির কোনও কোনও নেতা বলছেন, বাংলার মেরুদণ্ড ভেঙে দেবেন।’’ চ্যালেঞ্জ ছুড়ে মমতা বলেন, ‘‘আমি বলছি, আসুন না, এক বার চেষ্টা করে দেখুন। অনেক বার তো ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন, আজও করছেন।’’
এই প্রসঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রীর তোপ, ‘‘ধমকানি, চমকানি আর জেল-টেল দেখিয়ে প্লিজ ভয় দেখাবেন না। এটা আমরা অনেক দিন আগে পার হয়ে এসেছি। বন্দুকের সঙ্গে লড়াই করে এসেছি, নেংটি ইঁদুরের সঙ্গে লড়াই করতে ভয় পাব কেন? কিসের জন্য। ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই।’’ ঘটনাচক্রে, অভিষেকের স্ত্রীকে সিবিআই নোটিস পাঠানো নিয়ে দলের একাধিক নেতাও প্রায় একই সুরে কথা বলেছেন। যতক্ষণ প্রাণ আছে, ততক্ষণ ভয় পাবেন না বলেও ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
বাংলার প্রতি বঞ্চনার অভিযোগ তুলে মমতা বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের নাম পাল্টে বাংলা করার প্রস্তাব দিয়েছিলাম। প্রথমে বলা হল, সব ভাষায় একই নাম হতে হবে। তার পর বাংলা, ইংরেজি, হিন্দি— সব ভাষাতেই রাজ্যের নাম ‘বাংলা’ করে বিধানসভায় প্রস্তাব পাশ করে পাঠালাম। কিন্তু ৪ বছর ধরে ঝুলিয়ে রেখেছে।’’
এই অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার আগে সকালের দিকেই ভাষা দিবস উপলক্ষে টুইট করে ভাষা শহিদদের স্মরণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। সব ভাষাকে সম্মান জানানো উচিত। কিন্তু মাতৃভাষাকে ভালবাসতেই হবে বলেও টুইটে মন্তব্য করেন মমতা। সন্ধ্যার অনুষ্ঠানে নিজের লেখা কবিতা ‘একুশে’ আবৃত্তি করে শোনান মুখ্যমন্ত্রী।