ধরমবীর নুনিয়া
বৈধ কয়লার ব্যবসার ‘ডি ও’-র (‘ডেলিভারি অর্ডার’) নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ‘বিবাদের’ জেরে বুধবার রাতে ধরমবীর নুনিয়া (৪৮) নামে এক জনকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। জখম দু’জন। পশ্চিম বর্ধমানের অণ্ডালের খাসকাজোড়ার ঘটনা।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, খুনের পিছনে বৈধ কয়লার ব্যবসার দখল নিয়ে বিরোধ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তা বলেন, ‘‘তদন্তে সব দিক দেখা হচ্ছে।’’ বিরোধীদের দাবি, নিহত, আহত এবং অভিযুক্তেরা সকলেই তৃণমূলের কর্মী এবং দলের নেতাদের দ্বন্দ্বের জেরে এই ঘটনা।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারি অবশ্য বলেন, ‘‘কী ঘটেছে, খোঁজ নেব।’’
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাত ১১টায় ধরমবীরবাবু বাড়ির সামনে পড়শি মহেশ রামের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলেন। ধরমবীরবাবুর ছেলে নীতীশের অভিযোগ, ‘‘স্থানীয় বাসিন্দা বিদ্যুৎ নুনিয়া, তার সাত ভাই ও তাদের বাবা প্রাণকৃষ্ণ আমার বাবাকে চারটি গুলি করে। বাবা সেখানেই মারা যান। লাঠি-রড দিয়ে মারা হয় মহেশবাবুকে।’’
অভিযোগ, গুলির আওয়াজে ছুটে এলে ধরমবীরবাবুর ভাই পান্না নুনিয়ার ডান পায়ে বিদ্যুৎ গুলি করে। পরে তারা চম্পট দেয়। হাসপাতাল সূত্রের খবর, মহেশবাবু, পান্নাবাবুর অবস্থা স্থিতিশীল। ইসিএল কর্তৃপক্ষ জানান, সংস্থা ‘স্পট ই-অকশন’-এর মাধ্যমে তাদের থেকে কয়লা কেনার অনুমতি দেয় কোনও ব্যক্তি বা সংস্থাকে। সিপিএম ও বিজেপির দাবি, ওই অনুমতি বা ‘ডি ও’-র নিয়ন্ত্রণ নিয়েই তৃণমূল পরিচালিত জেলা পরিষদের সদস্য বিষ্ণুদেব নুনিয়া ও যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি রূপেশ যাদবের অনুগামীদের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিবাদ।
নিহত ও জখমেরা এলাকায় বিষ্ণুদেববাবুর এবং অভিযুক্তেরা রূপেশবাবুর অনুগামী হিসেবে পরিচিত, দাবি তৃণমূল সূত্রেরও। বিষ্ণুদেববাবু বলেন, ‘‘দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।’’ রূপেশবাবুর দাবি, ‘‘অভিযুক্তদের সঙ্গে আমার যোগ নেই।’’ সিপিএম নেতা প্রবীর মণ্ডল, বিজেপি নেতা লক্ষ্মণ ঘোড়ুইদের অভিযোগ, ‘‘কয়লার কারবার নিয়ে তৃণমূল নিজেদের মধ্যে মারামারি করছে।’’ অভিযোগ মানেননি তৃণমূল নেতৃত্ব। পুলিশ জানায়, বিদ্যুৎ, তার পাঁচ ভাই ও প্রাণকৃষ্ণকে বৃহস্পতিবার গ্রেফতার করা হয়েছে। দু’জন পলাতক। অভিযুক্তদের বাড়ি তালা বন্ধ।