—প্রতীকী ছবি।
মালদহে নাবালিকা খুনের ঘটনায় ধৃত যুবক তাদেরই দূর সম্পর্কের আত্মীয়। পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় ওই যুবক স্বীকার করেছেন, বদলা নিতেই নাবালিকাকে অপহরণ করে খুন করেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার তাঁকে মালদহ জেলা আদালতে হাজির করিয়ে ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতের আবেদন করা হয়েছে। বিচারক ১২ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। মালদহ জেলা পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব বলেন, ‘‘অভিযুক্ত প্রথম অপহরণ করে। তার পর চাকু দিয়ে নৃশংস ভাবে নাবালিকাকে খুন করে। প্রমাণ লোপাটের জন্য দেহও জঙ্গলে ফেলে দেয়। অভিযুক্তকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’’
প্রায় দু’দিন ধরে নিখোঁজ থাকার পর বুধবার গভীর রাতে মালদহ শহরের আমবাজার থেকে নাবালিকার মুণ্ডহীন দেহ উদ্ধার হয়। পরে কাটা মাথাও উদ্ধার হয় দেহ থেকে প্রায় ৫০ মিটার দূরে একটি পরিত্যক্ত গুদামঘরের ছাদ থেকে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেহ ও মুণ্ডটি ময়নাতদন্তে পাঠায়। পরে তদন্তে নেমে এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে অভিযুক্ত যুবক শ্রীকান্ত কেশরীকে আটক করে পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ওই যুবক নাবালিকাকে বাইকে করে কোথাও নিয়ে যাচ্ছেন। পুলিশ সূত্রে খবর, আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই তাঁর বয়ানে নানা অসঙ্গতি ধরা পড়ে। এর পরেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
তদন্তকারীদের একটি সূত্র জানিয়েছে, টানা জেরায় শেষমেশ ভেঙে পড়েন শ্রীকান্ত। তিনি জানান, নাবালিকার বাবা তাঁকে বিভিন্ন সময়ে মারধর করতেন। তা নিয়ে অনেক দিন ধরেই রাগ ছিল। বদলা নিতে নাবালিকার বাবাকে ভয় দেখানোর ছক কষেন তিনি। চেয়েছিলেন, মেয়েটির গলায় চাকু ধরে সেই ছবি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে দিতে। সেই মতো তাকে বাড়ি থেকে নিয়েও গিয়েছিলেন ছবি তোলার জন্য। কিন্তু গলায় চাকু ধরে থাকার সময় নাবালিকা ছটপট করতে থাকে। তাতে তার গলা কেটে যায়। এই ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়ে নাবালিকা নৃশংস ভাবে খুন করেন তিনি।
নাবালিকা একটি বেসরকারি স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়া। তার বাবা মনোজ কেশরী পেশায় ব্যবসায়ী। তাঁরা মালদহের বালুচর এলাকার বাসিন্দা। পরিবার সূত্রে খবর, গত সোমবার বাড়ির সামনে থেকে উধাও হয়ে যায় নাবালিকা। অনেক খোঁজাখুঁজির পরেও তার হদিস না মেলায় শেষে ইংরেজবাজার থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। তার প্রায় দু’দিন পর নাবালিকার দেহ উদ্ধার হল। অপহরণের করে খুনে ঘটনায় বুধবার রাত থেকেই উত্তপ্ত গোটা এলাকা। শ্রীকান্ত গ্রেফতার হওয়ার পরেই তাঁর বাড়ি ভাঙচুর করে জ্বালিয়ে দিয়েছেন স্থানীয়েরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।