প্রতীকী ছবি।
বিয়ের পর থেকেই শ্বশুরের কাছে মোটরবাইক দাবি করে আসছিল সে। শ্বশুর তা দিতে পারেননি। সেই রাগে ছ’বছরের শ্যালকের মুখে শিঙাড়া ঠুসে শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগে এক যুবককে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
নদিয়ার থানারপাড়ার ঘটনা। পুলিশ জানায়, ধৃতের নাম সোহেল শেখ। তার শ্যালক দিল ইসলামকে বুধবার সন্ধ্যা থেকে পাওয়া যাচ্ছিল না। শেষে এক দোকানের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে শুক্রবার বিকালে সোহেলকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাড়ে তিন মাস আগে বিহারের পূর্ণিয়া জেলার শাহজাদির সঙ্গে বিয়ে হয় থানারপাড়ার সাহেবপাড়া গ্রামের বছর ছাব্বিশের যুবক সোহেলের। শাহজাদি বাপের বাড়ি গিয়েছিল। দিন সাতেক আগে সোহেলের বাবা শহিদুল শেখ তাকে নিয়ে সাহেবনগর মালিথাপাড়ার বাড়িতে ফেরেন। শাহজাদির সঙ্গে আসে তার ছ’বছরের ভাই দিল।
মোটরবাইকের বদলে শ্যালক এসে হাজির হওয়ায় সোহেল রেগে আগুন। শাহজাদির কথায়, “ভাইকে সঙ্গে নিয়ে আসতে ও আমায় মারধর করেছিল। মোটরবাইক না পাওয়ায়ওর মনে এত রাগ ছিল বুঝিনি।” বুধবার বিকেলে দিলকে নিয়ে স্থানীয় ধোড়াদহ বাজারে বেড়াতে যায় সোহেল। রাতে বাড়ি ফিরে বলে, সে হারিয়ে গিয়েছে। অন্য সকলের সঙ্গে সে-ও খোঁজাখুঁজিতে লেগে পড়ে। ধোড়াদহ ১ পঞ্চায়েতের প্রধান মানেসুর রহমান মণ্ডল বলেন, “শ্যালককে খুঁজে পেতে নিজের খরচে বৃহস্পতিবার বিকেলে সোহেল মাইকে প্রচার করেছিল।”
তদন্তে নেমে ধোড়াদহ বাজারের এক দোকানির সিসিটিভি ফুটেজ পায় পুলিশ। তাতে নিস্তেজ দিলকে কাঁধে নিয়ে সোহেলকে সাইকেল চালিয়ে যেতে দেখা যায়। এর পরেই পুলিশ তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। পুলিশের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদে সোহেল স্বীকার করে যে, স্থানীয় একটি স্কুলের পাঁচিলের আড়ালে নিয়ে গিয়ে দিলকে সে শ্বাসরোধ করে মেরেছে। বালকটির মুখে সে শিঙাড়া ঠুসে দিয়েছিল, যাতে শব্দ করতে না পারে। তার পর কাছেই মুর্শিদাবাদের ফুলবাড়ি গ্রামে জলঙ্গির ঝোপে তার দেহ ফেলে এসেছে। সোহেলকে সঙ্গে করে নিয়ে গিয়ে পুলিশ পচন ধরা দেহটি উদ্ধার করে। আজ, শনিবার তা ময়না-তদন্তে পাঠানো হবে। খবর পেয়ে পূর্ণিয়ার বাইসি থানার গটপুর গ্রাম থেকে চলে আসেন দিলের বাবা মহম্মদ মনিরুল। তিনিই করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ছেলের দেহ শনাক্ত করেন। মনিরুলের কথায়, “বিয়ের পর থেকেই জামাই মোটরবাইক দিতে হবে বলে ফোন করে চাপ দিচ্ছিল। তা না পেয়ে আমার বাচ্চা ছেলেটাকে খুন করল!” শাহজাদি বলেন, “সুযোগ পেলে ও হয়তো আমাকেও খুন করবে। আমি বাপের বাড়িতে ফিরে যাব।”