বিরোধী দলনেতার দফতর থেকেই সব বিধায়ককে প্রয়োজন মাফিক ফাইবারের শ্যামাপ্রসাদের মূর্তি দেওয়া হবে। — ফাইল চিত্র।
আগামী ৬ জুলাই শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের জন্মদিনে নিজের নিজের বিধানসভা কেন্দ্রে তাঁর মূর্তি বসাবে বিজেপি বিধায়করা। জনসঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা শ্যামাপ্রসাদকে তাঁদের আদর্শ বলেই মেনে এসেছে বিজেপি। ১৯৮০ সালে বিজেপির গঠন হলেও শ্যামাপ্রসাদের ভাবনাকেই তাদের ভিত্তি বলে মনে করে কেন্দ্রের শাসকদল। তাই তাঁর জন্মবার্ষিকী দেশ জুড়ে পালন করেন বিজেপি নেতাকর্মীরা। এ বার তাঁদের সেই উদ্যোগে শামিল হতে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিজেপি বিধায়করা উদ্যোগী হয়েছে। মূলত বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর উদ্যোগে এই মূর্তি বসানোর বিষয়ে কাজ করবেন বিধায়করা। বিরোধী দলনেতার দফতর থেকেই সব বিধায়ককে প্রয়োজন মাফিক ফাইবারে শ্যামাপ্রসাদের মূর্তি দেওয়া হবে। এই জন্য নিজেদের প্রয়োজনের কথা বিজেপি পরিষদীয় দলের মুখ্য সচেতক মনোজ টিগগাকে জানাতে বলা হয়েছে। ইতিমধ্যে বিধায়করা নিজেদের এলাকায় কতগুলি মূর্তি বসানো যাবে, তা হিসাব করে সেই মতো তা জানিয়ে দিয়েছেন।
তবে নিজ নিজ বিধানসভা এলাকায় মূর্তি বসাতে তাঁরা কতটা সফল হবেন, তা নিয়ে বিজেপি বিধায়কদের মধ্যে উঠছে প্রশ্ন। শালতোড়ার বিজেপি বিধায়ক চন্দনা বাউরী প্রশ্ন তুলেছে, রাজ্যের পুরসভা থেকে শুরু করে পঞ্চায়েত— সবই শাসকদল তৃণমূলের দখলে। তাদের কাছে শ্যামাপ্রসাদের মূর্তি বসানোর অনুমতি চাওয়া হলে কোনও ভাবেই তা দেওয়া হবে না। তাই বিধায়করা চাইলেই যে নিজের এলাকায় শ্যামাপ্রসাদের মূর্তি বসাতে পারবেন, তেমনটা সম্ভব না-ও হতে পারে। মুখে এমনটা বললেও, নিজের এলাকার জন্য বেশ কয়েকটি শ্যামাপ্রসাদের মূর্তি চেয়েছেন তিনি। চন্দনার এমন প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন নাটাবাড়ির বিজেপি বিধায়ক মিহির গোস্বামী। তিনি বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত এবং পুরসভা তৃণমূলের দখলে রয়েছে বলে, শ্যামাপ্রসাদের মূর্তি বসানোর অনুমতি না-ও দিতে পারেন তাঁরা। কিন্তু কোনও বিধানসভার বিজেপির মণ্ডল অফিস, এলাকায় থাকা বিজেপির যে কোনও কার্যালয় কিংবা বিধায়কের বাড়ির সামনে শ্যামাপ্রসাদের মূর্তি বসানো যেতেই পারে। তাই নেতিবাচক ভাবনা ছেড়ে বিজেপি বিধায়কদের মূর্তি বসানোর উদ্যোগ এখন থেকেই শুরু করতে হবে।’’
সূত্রের খবর, সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে জিতে আসা বিজেপি বিধায়কদের শ্যামাপ্রসাদের মূর্তি বসানোর ক্ষেত্রে জোর দিতে বলা হয়েছে। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাজনের পর পশ্চিমবঙ্গের দ্বিখণ্ডিত হয়ে যাওয়ার ঘটনার প্রভাব এখন সীমান্তবর্তী এলাকায় রয়েছে বলেই মনে করে বিজেপির একাংশ। তাই সেই সমস্ত এলাকায় শ্যামাপ্রসাদের মূর্তি বসিয়ে পশ্চিমবঙ্গবাসীকে তাঁর কৃতিত্ব স্মরণ করানোই লক্ষ্য শিবিরের। যার সুফল আগামী লোকসভা নির্বাচনে পেতেই পারে বিজেপি, বলেই মনে করছেন বিধায়করা। তাই ৬৯ জন বিজেপি বিধায়ককেই শ্যামাপ্রসাদের মূর্তি বসানোর ক্ষেত্রে পদক্ষেপ করতে বলেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু।