শুক্রবার ইসলামপুর আদালতের নির্দেশে দশ দিনের পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন মেহবুব আলম। —ফাইল চিত্র।
ইসলামপুরে সিভিক ভলান্টিয়ার হত্যাকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত তৃণমূলের গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান মেহবুব আলমকে দল থেকে বহিষ্কার করলেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। শনিবার রাতে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরে দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূল সভাপতি কানহাইয়ালাল আগরওয়াল। যদিও শাসকদলের এই পদক্ষেপকে ‘লোকদেখানো’ বলে কটাক্ষ করেছেন জেলা বিজেপি নেতৃত্ব।
ইসলামপুরের দক্ষিণ মাটিকুণ্ডা গ্রামে ৮ মার্চ গভীর রাতে বোমাবাজি এবং গুলিচালনার জেরে নিহত হন শাকিব আখতার (৩০) নামে এক সিভিক ভলান্টিয়ার। এই ঘটনায় সরাসরি মেহবুবের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন শাকিবের পরিবারের সদস্যরা। তাঁদের অভিযোগ, ‘‘রাজনৈতিক কারণেই এই হামলা হয়েছে। কারণ শাকিবের দাদা শাহনওয়াজ আলম ইসলামপুরের তৃণমূল বিধায়ক করিম চৌধুরী গোষ্ঠীর লোক।’’ মাটিকুণ্ডা ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মেহবুবের নেতৃত্বে শাকিবের বাড়িতে হামলা চালানো হয় বলেও অভিযোগ। গোটা ঘটনায় কানহাইয়ালাল এবং ইসলামপুর ব্লক তৃণমূল সভাপতি জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন ইসলামপুরের তৃণমূল বিধায়ক। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপও দাবি করেছেন তিনি। মাটিকুণ্ডায় এই হামলার অভিযুক্ত মেহবুবকে বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার ইসলামপুর আদালতের নির্দেশে তিনি দশ দিনের পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন।
শনিবার মেহবুবকে বহিষ্কার করা ছাড়াও এই ঘটনায় জড়িত দুষ্কৃতীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার জন্য ইসলামপুর পুলিশ জেলার সুপার বিশপ সরকারকে সঙ্গে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা সভাপতি কানহাইয়ালাল। এ ছাড়া, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে গোয়ালপোখর, ইসলামপুর, চোপড়া জুড়ে বোমাবাজি, গুলিচালনার ঘটনা ঘটায় এলাকায় মজুত বোমা-গুলি উদ্ধারের বিষয়ে পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। যদিও তৃণমূল বিধায়ক আব্দুল করিম চৌধুরীকে নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি জেলা সভাপতি। তবে তাঁর মন্তব্য, ‘‘দলের ঊর্ধ্বে কেউ নয়। দল সবই খেয়াল রাখছে। দোষী ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে দল।’’
তৃণমূলের এই পদক্ষেপ নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি সুরজিৎ সেন। তিনি বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষকে দেখানোর জন্য এই বহিষ্কার। কোনও মানুষের প্রাণ যাওয়ার আগে কেন ব্যবস্থা নিল না তৃণমূল? এর আগেও এই প্রধানের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ ছিল। তখন এই পদক্ষেপ করলে এই ঘটনা হয়তো ঘটত না। আসলে এগুলো সাধারণ মানুষের চোখে ধুলো দেওয়ার জন্য করা হচ্ছে।’’