প্রতীকী ছবি।
কলকাতা হাইকোর্টে মামলাটি পড়ে ছিল ১৩ বছর। সোমবার বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী ও বিচারপতি শুভ্রা ঘোষের বেঞ্চে পেশ করার ঘণ্টাখানেকের মধ্যে তার নিষ্পত্তি হয়ে গেল। স্বামী তাপস পাইনকে খুনের দায়ে প্রায় ১৬ বছর আগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বৃদ্ধা কবিতা পাইনের সাজা মকুব করেন দুই বিচারপতি।
বিচারপতিরা বলেন, ওই খুন পরিকল্পিত নয়, অনিচ্ছাকৃত। কবিতা যথেষ্ট শাস্তি পেয়েছেন। তাই তাঁর সাজা মকুবের নির্দেশ দিচ্ছে হাইকোর্ট। কবিতার সঙ্গে অভিযুক্ত তাঁর পুত্র মৃগাঙ্ক, ছেলের এক বন্ধু প্রসূন ভট্টাচার্য দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন। তখনও নিম্ন আদালতে খুনের মামলা চলছিল।
হুগলির চুঁচুড়া থানার গোয়ালটুলি পিপুলপাতিতে ‘খুনের’ ঘটনাটি ঘটে ১৯৯৬ সালের ৩ সেপ্টেম্বর। ২০০৪ সালে কবিতাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন হুগলির অতিরিক্ত দায়রা জেলা জজ। তাপসবাবু ও কবিতার দাম্পত্য সম্পর্কে জটিলতা ছিল। ৪৯৮এ ধারায় মামলাও করেন কবিতা। সে-রাতে বাবার সঙ্গে কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়েন মৃগাঙ্ক। আদালতের পর্যবেক্ষণ, তাপসবাবু সে-রাতে মদ্যপান করেছিলেন। তিনিই প্রথমে ছেলেকে মারেন। তার পরে ছেলে গাছের ডাল, স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে বাবাকে আঘাত করেন। মৃগাঙ্কের দুই বন্ধু সঞ্জীব দাস ও প্রসূন সেখানে ছিলেন। কোর্ট বলছে, কবিতা ছেলেকে নিরস্ত করতে চেয়েছিলেন। তাপসবাবুর হার্টের অসুখ ছিল। সে-রাতে শুয়ে পড়ার কিছু পরে তিনি মারা যান। তাপস-কবিতার নাবালিকা কন্যার বয়ানের ভিত্তিতে পুলিশ মামলা সাজায়। সঞ্জীব এখন জামিনে আছেন। তাঁকেও ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: ব্লিচিংয়ে তো মরেই না ডেঙ্গির মশা, উল্টে ক্ষতি বাস্তুতন্ত্রের
আলিপুর মহিলা জেলে সত্তরোর্ধ্ব কবিতার শরীর ভেঙে পড়েছে। তাঁর পাশে দাঁড়ায় একটি আইনি পরিষেবা মঞ্চ। নিখরচায় তাঁর মামলা লড়েন জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়। ‘‘ছাড়া পেয়ে ওঁর বাকি জীবনটুকু শান্তিতে কাটুক,’’ বলছেন জয়ন্তনারায়ণবাবু।