গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।
মাদক বিক্রির অভিযোগ ছিল পুরো পরিবারের বিরুদ্ধে। নেশায় আসক্ত বাড়ির ছেলেও। কিন্তু কিছু দিন আগে নেশামুক্তি কেন্দ্র থেকে ফিরে কারবার ছেড়েছিল সে। পাড়া-পড়শির চাপও ছিল।
কিন্তু নেশা ছেড়েও মাদকাসক্তদের হাত থেকে রেহাই মিলল না। মাদক না পেয়ে বাবা-মা-ছেলের উপরে কিছু যুবক চড়াও হয় বলে অভিযোগ। মারধরে মারা গিয়েছেন গৃহকর্তা জিতেন সিকদার (৮২)। জখম তাঁর স্ত্রী ও ছেলে।
রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ শহরের রামকৃষ্ণপল্লি এলাকায়। শেফালি এবং রাজু সিকদার বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। ধৃতদের নাম রনি সাহা এবং কৃষ্ণেন্দু বিশ্বাস। বাড়ি বনগাঁ শহরে। তাপস অধিকারী নামে অন্য এক অভিযুক্ত পলাতক। তার খোঁজ চলছে। ধৃতদের সোমবার বনগাঁ মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন। নিহতের মেয়ে সাধনার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। বনগাঁ থানার আইসি মানস চৌধুরী বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, অভিযুক্তেরা হেরোইন কিনতে ওই বাড়িতে গিয়েছিল। না পেয়ে মারধর করে।’’
আরও পড়ুন: বেসরকারি ট্রেন কি উত্তর পূর্ব রেলেও
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সিকদার পরিবার আগে হেরোইন বিক্রি হত। বহিরাগত যুবকদের যাতায়াত ছিল সেখানে। রাজুও কারবার চালাত। নিজে নেশাও করত বলে অভিযোগ। তদন্তকারী এক অফিসার বলেন, ‘‘টিন দিয়ে ঘেরা ছোট্ট একটি ঘরে বসে নেশা করত অনেকে।’’ পুলিশ জানিয়েছে, রাত সাড়ে ৭টা নাগাদ কয়েক জন যুবক জিতেনের বাড়িতে এসে হেরোইন চায়। বাড়ির লোকজন জানিয়ে দেন, তাঁরা আর কারবার চালান না। বাড়ির ছেলেও নেশা ছেড়ে দিয়েছে। এতেই চটে যায় ওই যুবকেরা। বাড়িতে ভাঙচুর শুরু করে। রাজুকে বাঁশ দিয়ে পেটায়। বৃদ্ধ বাবা-মা ঠেকাতে এলে তাঁদেরও মারধর করে। ঘটনাস্থলেই মারা যান জিতেন। আশপাশের লোকজন চলে এলে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা।
পাড়ার এক বৃদ্ধ বলেন, ‘‘পরিবারটি বহু দিন ধরেই হেরোইন বিক্রি করত। বাইরে থেকে যুবকেরা ভিড় করত। তবে সম্প্রতি কারবার বন্ধ করেছিল। পাড়ার লোকজন চাপ দিয়েছিল। মাস কয়েক আগে এলাকার মহিলারা রাজুকে এক রকম জোর করেই নেশামুক্তি কেন্দ্রে পাঠান।