সাবধান: জঙ্গলে বাঘ রয়েছে। তাই সচেতন হোন। বাঘের ছবি দেখিয়ে আলিপুরদুয়ারের পানিঝোরা বনবস্তিতে প্রচার চালাচ্ছে বন দফতর। সোমবার। ছবি: নারায়ণ দে
বাঘ তো দেখা দিল। কিন্তু বক্সায় সে নিরাপদ তো?
রাজ্য বন বিভাগের আধিকারিকদের কাছে এখন এটাই সব থেকে বড় মাথাব্যথার বিষয়। বস্তুত, এই জঙ্গলে বর্তমান পরিস্থিতিতে বাঘের নিরাপত্তা কতটা রয়েছে, তা খতিয়ে দেখতে কাল, মঙ্গলবার বক্সায় আসছে কলকাতার বিশেষ দল। রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকও এ দিন বলেন, “এখন আমাদের মূল লক্ষ্য, বক্সায় যে বাঘটি দেখা গিয়েছে, তাকে নিরাপদে রাখা।” বন আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, একই সঙ্গে বাঘটিকে বক্সায় ‘ধরে রাখা’ও তাঁদের কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ।
কেন সরকার বাঘের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগে? স্থানীয় প্রশাসন তো বটেই, বন আধিকারিক এবং বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞরা সকলেই একবাক্যে বলছেন, বক্সায় বেআইনি ভাবে গাছ কাটা, চোরা শিকারির দৌরাত্ম্য বেড়েছে। বেড়েছে বনবস্তিও। ‘কোর’ এলাকা বলে চিহ্নিত জঙ্গলে গরু চরাতে যাওয়ার ঘটনাও নিয়মিত ঘটে থাকে। প্রশ্ন উঠেছে, এমন যদি বনের দশা হয়, তা হলে সেখানে বাঘ কতটা নিরাপদ? তাই বক্সায় বাঘের বসবাসের পরিবেশ তৈরির কাজ শুরু হয়। বন দফতর সূত্রের খবর, সেই লক্ষ্যে শেষ কয়েক বছরে এই জঙ্গলে পাঁচ শতাধিক হরিণ ছাড়া হয়েছে। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ক্ষেত্র অধিকর্তা বুদ্ধরাজ সেওয়া জানান, আগামী দিনে এখানে আরও হরিণ ছাড়ার পরিকল্পনা তাদের রয়েছে।
বক্সায় সম্পূর্ণভাবে বাঘ বসবাসের পরিবেশ তৈরি করা কি সম্ভব? তা নিয়ে কিন্তু সংশয় রয়েছে পরিবেশকর্মীদের একাংশের। ন্যাফের কো-অর্ডিনেটর অনিমেষ বসু বলেন, “বছরের পর বছর গাছ কাটার ফলে জঙ্গল অনেকটাই সংকুচিত হয়েছে। জনবসতি গড়ে ওঠার পাশাপাশি কাছেপিঠে অনেক চা বাগানও আছে। রোজ প্রচুর মানুষ জ্বালানি সংগ্রহে বা গবাদি পশু চরাতে জঙ্গলে ঢোকেন। এমন পরিবেশ একেবারেই পছন্দ নয়।’’ তাঁর কথায়, ‘‘পরিবেশ না বদলালে বক্সায় বাঘ ধরে রাখা কঠিন।”