ন্যাশনাল ভলান্টিয়ার ফোর্স বা এনভিএফ-এ নিয়োগে স্বজনপোষণের অভিযোগ নিয়ে রাজ্য সরকার, বিশেষ করে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিবকে ভর্ত্সনা করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। তার জেরে রাজ্য সরকার বুধবার আদালতে জানাল, জঙ্গলমহলে ওই বাহিনীতে ২০৮ জন কর্মীকে নিয়োগ করা হবে।
জঙ্গলমহল এলাকায় এনভিএফ কর্মী নিয়োগ নিয়ে স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলে হাইকোর্টে একটি মামলা হয়েছে। যাঁরা ওই মামলা করেন, তাঁদের নাম ‘ওয়েটিং লিস্ট’ বা প্রতীক্ষা-তালিকার উপরের দিকে ছিল। আবেদনকারীদের আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত ও বিক্রম বন্দ্যোপাধ্যায় আদালতে অভিযোগ করেন, তাঁদের মক্কেলদের বঞ্চিত করে প্রতীক্ষা-তালিকায় নীচের দিকে নাম থাকা বেশ কয়েক জনকে এনভিএফে চাকরি দেওয়া হয়েছে। সেই অভিযোগ শুনে হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় এনভিএফ নিয়োগ নিয়ে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিবের কাছ থেকে কয়েকটি প্রশ্নের জবাব চেয়েছিলেন। সেই সব প্রশ্নের জবাব না-পেয়ে বিচারপতি গত ১৮ মার্চ স্বরাষ্ট্রসচিবকে কার্যত ভর্ত্সনা করেন। প্রশ্ন তোলেন, “স্বরাষ্ট্রসচিব নির্দেশ বোঝেন না, নাকি বুঝতে চান না?” বিচারপতি সে-দিন নির্দেশ দেন, স্বরাষ্ট্রসচিবকে ফের হলফনামা পেশ করে সব প্রশ্নের জবাব দিতে হবে।
রাজ্যের জিপি (গভর্নমেন্ট প্লিডার) অভ্রতোষ মজুমদার এ দিন আদালতে নতুন একটি হলফনামা দাখিল করে জানান, রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব এবং স্বরাষ্ট্রসচিব সেটি পেশ করেছেন। ওই হলফনামায় এনভিএফ নিয়োগের সবিস্তার বিবরণ আছে। বিচারপতি সেই হলফনামা পড়ার পরে জিপি জানান, সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, জঙ্গলমহলের ১৮টি ব্লকে প্রতীক্ষা-তালিকায় থাকা ২০৮ জনকে এনভিএফে নিয়োগ করা হবে। যাঁরা চাকরি না-পেয়ে মামলা করেছেন, তাঁরা তো চাকরি পাবেনই। এ ছাড়াও যাঁদের নাম প্রতীক্ষা-তালিকায় রয়েছে, তাঁদেরও নিয়োগ করা হবে। তবে জিপি আর্জি জানান, শূন্য পদ পূরণের পরে (২০৮ জনের নিয়োগ) প্রতীক্ষা-তালিকা বাতিল করার অনুমতি দিক আদালত।
সব শুনে বিচারপতি নির্দেশ দেন, আগামী তিন মাসের মধ্যে জঙ্গলমহলে এনভিএফের শূন্য পদে ২০৮ জনকে নিয়োগ করতে হবে। প্রতীক্ষা-তালিকা বাতিল হবে শূন্য পদ পূরণের পরে। যাঁদের টপকে অন্যদের আগে চাকরি দেওয়া হয়েছে, তাঁদের ‘সিনিয়রিটি’ বজায় রাখতে হবে। তবে যে-দিন থেকে তাঁরা চাকরিতে নিযুক্ত হবেন, তাঁদের বেতন মিলবে সে-দিন থেকে।