ফাইল ছবি
কোভিড সংক্রমণ কিছুটা কমলেও শহর ও শহরতলিতে বাড়ছে ইনফ্লুয়েঞ্জা। শহরের একাধিক বেসরকারি হাসপাতালে তীব্র জ্বর সহ একাধিক উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। কোভিডের তৃতীয় ঢেউয়ের আগে ঘরে ঘরে এই জ্বর ভাবাচ্ছে চিকিৎসকদের। অতীতেও বর্ষার মরশুমে রাজ্যে ইনফ্লুয়েঞ্জার বাড়বাড়ন্ত লক্ষ করা গিয়েছে। কিন্তু এই বছর ইনফ্লুয়েঞ্জা বাড়ার জন্য প্রত্যক্ষ ভাবে কোভিডকেই দায়ী করছেন চিকিৎসকরা। ইনফ্লুয়েঞ্জার টিকা নেওয়া থাকলে মরশুমি জ্বর থেকে বাঁচা সম্ভব বলে চিকিৎসকদের মত। কিন্তু কোভিড আতঙ্কে এবং কোভিড মোকাবিলায় জারি থাকা কড়াকড়ির কারণে ইনফ্লুয়েঞ্জার টিকা নিতে হাসপাতালমুখী হননি অনেকেই। তাতেই চলতি বছরে ইনফ্লুয়েঞ্জা বাড়ছে বলে মনে করছেন সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ থেকে ক্রিটিক্যাল কেয়ারের চিকিৎসকরা।
কোভিড আক্রান্ত হয়ে গুরুতর অসুস্থদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমছে। ফুসফুসে সংক্রমণ ছড়ালে সারতেও সময় লাগছে। এই অবস্থায় ইনফ্লুয়েঞ্জা কম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন রোগীদের বিপদ বাড়াতে পারে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। কোভিড কালে বয়স্ক, ফুসফুসের রোগী, হাঁপানি রোগী বা রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা কম যাঁদের, তাঁদের ইনফ্লুয়েঞ্জা টিকা নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেবকিশোর গুপ্ত।
বছরে এক বার এই টিকা নিলে ইনফ্লুয়েঞ্জার বিরুদ্ধে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে। আমেরিকার সেন্টার ফর জিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন বা সিডিসিও বছরে এক বার এই টিকা নেওয়া যেতে পারে বলে জানিয়েছে। তাতে মরশুমি বিভিন্ন জ্বর থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব। ২ বছরের উপর বয়সের প্রত্যেকেই এই টিকা নিতে পারেন। তবে বয়স্করা এই টিকা বেশি নেন বলে জানান ক্রিটিক্যাল কেয়ারের চিকিৎসক দেবরাজ যশ। তিনি বলেন, ‘‘কোভিডের কারণে বয়স্করা হাসপাতালে আসা এড়াতেই এই টিকা নিতে পারেননি। অনেকে আবার কোভিড টিকা নিলে ইনফ্লুয়েঞ্জা হবে না ভাবছেন। পাশাপাশি একই বছরে কোভিড এবং ইনফ্লুয়েঞ্জার দু’টি টিকা এক সঙ্গে নিলে বিপরীত প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কায় ইনফ্লুয়েঞ্জার টিকা নেননি অনেকে। টিকা না নেওয়াই এই বছর ইনফ্লুয়েঞ্জা বাড়ার অন্যতম কারণ।’’ যদিও দেবরাজের মতে, কোভিড এবং ইনফ্লুয়েঞ্জা টিকার মধ্যে কোনও বিরোধ নেই। প্রয়োজনে চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে বয়স্ক এবং কম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের ইনফ্লুয়েঞ্জা টিকা নেওয়া উচিত। ভারতে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে এই টিকা নেওয়াই বিধেয়। টিকা নেওয়ার পর ৩ থেকে ৪ সপ্তাহের মধ্যে শরীরে ইনফ্লুয়েঞ্জার বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে বলেও জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা।