শুধু ফাগুন নয়, এ বার সারা বছরই পলাশের মাস! কারণ, এ বার থেকে রাজ্য সরকারের বিশ্ববঙ্গ বিপণিতে সারা বছরই বিকোবে পলাশ ফুল থেকে তৈরি হওয়া লাল আবির। বিপণনের কৌশলে বাহারি নামও দেওয়া হয়েছে তার। ‘বনপলাশী’!
পশ্চিমবঙ্গ তফসিলি জাতি-উপজাতি উন্নয়ন ও অর্থ নিগম জানিয়েছে, বাঁশের কৌটোয় পুরে বিক্রি হবে ওই লাল আবির। একই ভাবে মিলবে নীল অপরাজিতা ও লাল-হলুদ গাঁদার সুগন্ধী আবিরও। বিশ্ববঙ্গের পাশাপাশি খাদি, মঞ্জুষার মতো সরকারি দোকানেও সারা বছর এই আবির মিলবে।
শীত পেরিয়ে বসন্তের আগমনে পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলি পলাশে-পলাশে আগুন রঙা হয়ে ওঠে। সেই ফুল কী ভাবে জঙ্গলমহলের বাসিন্দাদের কাছে অর্থকরী হয়ে উঠতে পারে তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছিল পুরুলিয়া জেলাপ্রশাসন। শেষে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে রণবীর বসু নামে এক প্রশিক্ষককে পুরুলিয়ায় নিয়ে গিয়ে পলাশ থেকে আবীর তৈরির প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। গত তিন মাস ধরে সেই প্রশিক্ষণে ১৫০ কিলোগ্রাম ফুলের আবির তৈরি করা হয়েছে। ১০০ গ্রামের দাম ২৫ টাকা।
নিগমের এক কর্তা জানান, পুরুলিয়ার বলরামপুর ব্লকের জনা বাছাই করা ৩৫ জন আদিবাসী মহিলাই এই উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ফুলের পাপড়ি গরম জলে ফুটিয়ে পরে তা রোদে শুকিয়ে গুঁড়ো করে আবির তৈরি করা হয়েছে। কোনও রকম রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়নি এতে। আবির তৈরি সফল হওয়ায় ভবিষ্যতে পুরুলিয়ার অন্যান্য ব্লকেও এই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। কাজে লাগানো হবে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকেও।
ফুলের আবিরের চাহিদা গত কয়েক বছর ধরেই রাজ্যে বাড়ছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়েও ফুলের পাপড়ি থেকে আবির তৈরি হতো। কিন্তু সে সবের বিপণন সীমিত ছিল। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, সারা বছর কি আবিরের বাজার থাকবে?
নিগমের এক কর্তার ব্যাখ্যা, এখন শুধু দোলে নয়, বিভিন্ন উৎসবেও আবিরের ব্যবহার বেড়েছে। ফলে সারা বছর আবিরের চাহিদা রয়েছে।