সব বিধি মেনে প্রস্তুত ছিলেন শিক্ষকেরা।
সব বিধি মেনে প্রস্তুত ছিলেন শিক্ষকেরা। স্কুলের গেট খোলা। তৈরি স্যানিটাইজ়ার থেকে থার্মাল গান। কিন্তু পড়ুয়াদের দেখা নেই। মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়া গোবরগাড়া হাইমাদ্রাসায় সাড়ে দশটা পর্যন্ত এক জন পড়ুয়াকেও দেখা গেল না।
চটজলদি সিদ্ধান্ত নিয়ে বেশ কিছু শিক্ষক শিক্ষিকা তখন কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে পড়ুয়াদের খুঁজতে বেরিয়ে পড়েন পাড়ায়। এগারোটার সময় হাতে গোনা কয়েকজন ছাত্রী নিয়ে শুরু হয় পঠনপাঠন। তবে এ দিন একটি ছাত্রও স্কুলে পা দেয়নি বলে খবর। কিন্তু কেন এই অবস্থা? সেই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে শিক্ষকদের মনে। মাদ্রাসা প্রধান শিক্ষক বকুল আহম্মেদ বলেন, ‘‘মঙ্গলবার মাদ্রাসা খোলার প্রস্তুতি নেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ভাবে ছাত্রছাত্রীদের জানিয়ে দিয়েছিলাম যে এ দিন থেকে ক্লাস শুরু হবে। কিন্তু সাড়ে দশটা পর্যন্ত পড়ুয়ারা মাদ্রাসায় হাজির না হওয়াতেই আমরা পড়ুয়াদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজখবর নিতে থাকি। পরে অনেক পড়ুয়াকে আমরা মাদ্রাসায় হাজির করতে পেরেছি।’’
মাদ্রাসার শিক্ষিকা তনুজা শাসমল, বাণী সুলতানা, বাহারুল উলুমরা ছাত্রীদের সন্ধানে বেরোন সকালে। প্রধান শিক্ষক বকুল আহম্মেদ, সহ শিক্ষক মির মোজাফফর আরও বেশ কিছু শিক্ষককে সঙ্গে নিয়ে মোটরবাইকে চেপে হোসেনপুর, জামিরা, মাদারতলা এলাকায় পড়ুয়াদের খোঁজে এলাকা চষে বেড়ান। বাড়ি বাড়ি খোঁজ নিয়ে শিক্ষকেরা
জানতে পারেন পড়ুয়াদের কেউ গিয়েছে ইটভাটায় কাজে। কেউ আবার গিয়েছে খেতের কাজে। ভিন্ রাজ্যে শ্রমিকের কাজে যাওয়া পড়ুয়ার সংখ্যাটাও নেহাৎ কম নয় বলে জানান এক শিক্ষক। তা ছাড়া, নজরদারি এড়িয়ে অনেক নাবালিকা ছাত্রীর বিয়েও হয়ে গিয়েছে বলে জানতে পারেন শিক্ষকেরা।
শিক্ষিকারা গ্রামে বেরোনোর পর প্রতিটি শ্রেণিতে পরে পড়ুয়ার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ২০-২৫ জন। দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী মামদুদা খাতুন, নার্গিস খাতুনেরা জানায়, ‘‘অনেক দিন পর স্কুল খুলছে। আদতে ক্লাস হবে কি-না তা ভেবেই অনেকে স্কুলে আসেনি।’’ পড়ুয়াদের ধরে মাদ্রাসায় আনার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে জানান শিক্ষকেরা।