মান্না স্মরণে
কথায়-গানে স্মরণ করা হল মান্না দে-কে। গত ২৪ অক্টোবর সন্ধ্যায় আলিপুরদুয়ার পুরসভা হলে অনুষ্ঠিত হয়েছে মান্না-স্মরণ। আলিপুরদুয়ার শিল্পী সংসদের পরিচালনায় মান্না দে’র প্রথম মৃত্যু বার্ষিকীর দিনে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। ভিড়ে ঠাসা হলে সঞ্চালক অভিজিত্ নাথ শিল্পীর সম্পর্কে নানা তথ্য জানিয়ে দেন। তারপরেই শঙ্কর রায়ের ‘তুমি কি কেবলি ছবি’ গান দিয়ে অনুষ্ঠানের শুরু। একে একে কুন্তলা বিশ্বাস, অঙ্কিত মালাকার, প্রিয়াঙ্কি চক্রবর্তী, মধুরিমা ভাদুড়ি, মধুরিমা চৌধুরী, অনিন্দিতা বিশ্বাস, দেবপ্রিয়া ভট্টাচার্য, সম্রাট চক্রবর্তী, প্রশান্ত সেন, উপাসনা চক্রবর্তী, অমল চট্টোপাধ্যায়, শোভন সরকারেরা শিল্পীরই গাওয়া গান গেয়ে তাঁকে শ্রদ্ধা জানান। চয়ন সরকার এবং উপাসনা চক্রবর্তী বেশ কয়েকটি ডুয়েট গানও শোনান। মান্না দের একাধিক জনপ্রিয় এবং তুলনামুলক বিস্মৃত গান শুনিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রিয় শিল্পী অনুমাধব সরকার। শিল্পীদের সঙ্গে বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রে সহযোগিতা করেছেন শিবু রায়, প্রণব বিশ্বাস, বিপ্লব দে, প্রকাশ মণ্ডল, শান্তিরঞ্জন চক্রবর্তী, সত্যজিত্ ভট্টাচার্য ও প্রশান্ত বাগচি দেওয়ান।
সিঞ্চুলার ছায়ায়
কোজাগরি পূর্ণিমায় তাজমহল দেখার অনুভূতি তেমন রোমাঞ্চ জাগাতে না পারলেও, মানসের জঙ্গলে দেখা বাঘ সেই রোমাঞ্চ, উত্তেজনা জাগিয়েছিল লেখকের মনে। তিনি লিখেছেন, “মানস নদীর পাড়ে, উন্মুক্ত শর বনে নিঃশব্দে শায়িত বনরাজ।” গভীর জঙ্গলের ভিতরের সেই দৃশ্যের বর্ণনা রয়েছে ‘সিঞ্চুলার ছায়ায় বক্সা ও অনান্য’ বইতে। গৌরীশঙ্কর ভট্টাচার্যের লেখা এই বইতে বক্সা থেকে জিম করবেটের বাঘ-প্রেম সবই জানা যাবে। সিমলিপাল জাতীয় উদ্যানের খৈরি ফিল্ড অধিকর্তা সরোজ রায়চৌধুরী যে বাঘ পুষতেন তাও জানা যায় বই পড়ে। উত্তরবঙ্গের আদিম জনজাতি টোটোদের জীবনযাত্রা, লৌকিকতা এমনকী, হরিদ্বারের হর-কী-গৌরী ঘাটে বসে গঙ্গার বয়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখার বিবরণও জানা যাবে গৌরীবাবুর বইতে। ১৬২ পৃষ্ঠার বইটিতে ২১টি ভ্রমণ বৃত্তান্ত রয়েছে। সিঞ্চুলার ছায়া-বক্সা নামে একটি প্রবন্ধটি রয়েছে। প্রাবন্ধিক উমেশ শর্মা এবং প্রয়াত কবি সুনীল চক্রবর্তীকে লেখক বইটি উত্সর্গ করেছেন।
উত্সারিত আলো
মালদহের ‘উত্সারিত আলো’র নবম সংখ্যার বিষয়, নদী। সংকলনের নিবন্ধ, সাক্ষাত্কার, এমনকী কবিতাও নদীকেন্দ্রিক। বারোটি নিবন্ধে নদী আর নদীপারের অজস্র টুকরো ছবি। সেই ছবি নদী-উত্সবের, নদী-সংস্কৃতির। কখনও নদীর জলে যুদ্ধকথার ছবি, কখনও ভাঙনের। বহতা জলধারায় কলম-তুলির আঁচড় কেটেছেন আনন্দগোপাল ঘোষ, সুস্মিতা সোম, সুকল্যাণ ভট্টাচার্য-সহ আরও অনেকে। কেয়া বাগচির ‘অন্য চোখে ভুতনির চর’ একটি অসাধারণ ল্যান্ডস্কেপ। ‘নদীযাত্রা’ শীর্ষক কবিতাগুলি যেন ছলাত্ছল শব্দ শোনায়। বিষয় নির্বাচন, তথ্য বিন্যাস এবং উপস্থাপনার জন্য পলাশ গোস্বামী সম্পাদিত পত্রিকাটি সংগ্রহে রাখার মতো।
দুই বাংলার গান
দুই বাংলার শিল্পী সমন্বয়ে নায়েব আলি (টেপু)র জন্ম বার্ষিকী উপলক্ষে ভাওয়াইয়া সংগীতের আসর বসছে কোচবিহারের মোয়ামারিতে। আগামী ২৫-২৭ ডিসেম্বর মোয়ামারি তত্ত্বনাথ হাইস্কুল চত্বরে ওই অনুষ্ঠান হবে। অনুষ্ঠানের আয়োজক নায়েব আলি (টেপু) স্মরণ সমিতির সভাপতি রাজ্যের পরিষদীয় সচিব রবীন্দ্রনাথ ঘোষ জানান, উত্তরবঙ্গের পাশাপাশি বাংলাদেশের খ্যাতনামা শিল্পীরা ওই অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করবেন। আয়োজক কমিটির কর্মকর্তা পার্থপ্রতিম রায় বলেন, বাংলাদেশের অনিতা মুক্তি গোমস, ভূপতি মোহন বর্মা, অসমের হামিদা সরকারের সন্মতি মিলেছে ইতিমধ্যে।
মেলা-কথা
রাজ্যের মেলা এবং উত্সব নিয়ে অশোক মিত্রের লেখা বই রয়েছে। রাজ্যের আরও নানা প্রান্তের আঞ্চলিক লোকাচার নিয়েও বই প্রকাশ হয়েছে। তবে উত্তরবঙ্গের মেলা ও উত্সব নিয়ে দুই মলাটের মধ্যে তথ্য একত্রিত নেই বলে অনেকেরই আক্ষেপ ছিল। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে প্রকাশিত হয়েছে রতন বিশ্বাসের সম্পাদিত ‘উত্তরবঙ্গের মেলা ও উত্সব’। সেই বইয়ের ভূমিকাতেই উত্তরবঙ্গের মেলা নিয়ে সঙ্কলিত তথ্য নেই বলে আক্ষেপের কথাও রয়েছে। দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি থেকে দুই দিনাজপুর, মালদহ, কোচবিহার জেলার বিভিন্ন মেলা এবং উত্সবের বর্ণনা রয়েছে এই বইতে। ৯ জন লেখক নানা উত্সবের খুঁটিনাটি তুলে ধরেছেন। উত্তরবঙ্গের আদিবাসী এবং মুসলমানদের মেলা ও উত্সব নিয়েও দু’টি পৃথক প্রবন্ধ রয়েছে।
নীল ছায়ানট
আনুষ্ঠানিক প্রকাশ ঘটল ‘তিস্তানন্দিনী’ সাহিত্য পত্রিকার চতুর্দশতম সংখ্যার। সাহিত্য সংস্কৃতির মেলবন্ধনে সাজানো সান্ধ্য অনুষ্ঠানটি হল জলপাইগুড়ির সুভাষ ভবনে। পত্রিকার পক্ষ থেকে প্রকাশক মিনতি মজুমদার সংবর্ধনা জানালেন জ্যোত্স্নেন্দু চক্রবর্তী, উমেশ শর্মা, রণজিত্ মিত্র, অমিতকুমার দে ও প্রবীর রায়কে। তিস্তানন্দিনীরা প্রতিষ্ঠাতা-সম্পাদক তনুশ্রী পালকে উত্তরীয় উপহার দিয়ে সম্মান জানায়। অনুষ্ঠানে রবীন্দ্র রচনার অংশবিশেষ নিয়ে নির্মিত কোলাজ পাঠ করেন শিলিগুড়ি থেকে আগত শ্রাবণী সেনগুপ্ত, অংশুমান পাল ও জয়িতা সেন। তিস্তানন্দিনীদের পরিবেশিত উত্তরবঙ্গের কবিদের কবিতা অবলম্বনে ‘ভাঙনের বেহালা’ আলেখ্যটি ছিল অন্য স্বাদের। মৌসুমী চৌধুরী শোনান ঠুংরি, গজল ও বাংলা রাগপ্রধান। অভিজিত্ চৌধুরীর পুরিয়া কল্যাণ রাগে খেয়াল আর সীমা চৌধুরীর গজল ছিল অন্য রকম।